সিআইডির ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবের বিশ্লেষণে প্রমাণিত হয়েছে, সরকারবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে গুলি চালানোর নির্দেশসংবলিত একটি ফোনালাপে থাকা নারী কণ্ঠস্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবং পুরুষ কণ্ঠস্বর তৎকালীন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২–এ দেওয়া সাক্ষ্যে এই তথ্য জানান সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবের কর্মকর্তা ও পুলিশ পরিদর্শক রোকোনুজ্জামান। তিনি মামলার ৪৯ নম্বর সাক্ষী হিসেবে বলেন, ‘ল্যাব পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া গেছে, ফোনালাপে নারী কণ্ঠটি শেখ হাসিনার এবং পুরুষ কণ্ঠটি তাপসের।’
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এই ফোনালাপ গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য গ্রহণের সময় অডিওটি আদালতে শোনানোও হয়।
একটি বিদেশি সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, জাতীয় টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (এনটিএমসি) ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনা ও শেখ তাপসের মধ্যে এই কথোপকথন রেকর্ড করে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও আন্তর্জাতিক কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হওয়া ওই ফোনালাপে শোনা যায়, শেখ হাসিনা তার এক ঘনিষ্টজনকে বলেন, ‘আমার নির্দেশ ইতোমধ্যেই দেওয়া হয়ে গেছে। আমি সরাসরি নির্দেশ দিয়েছি। এখন তারা প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করবে, যেখানে পাবে সেখানে গুলি করবে।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমি এতদিন তাদের থামিয়ে রেখেছিলাম … আমি ছাত্রদের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবছিলাম।’
তাপসের সঙ্গে আলাপে শেখ হাসিনা জানান, হেলিকপ্টারের মাধ্যমে আন্দোলন দমন অভিযান পরিচালিত হচ্ছে এবং বিভিন্ন স্থানে আকাশপথ থেকে অভিযান শুরু হয়ে গেছে।
পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, ওই অডিও রেকর্ডটি শেখ হাসিনা ও ফজলে নূর তাপসের ফোনালাপ।