আমেরিকায় প্রথমবারের মতো মানুষের দেহে ‘নিউ ওয়ার্ল্ড স্ক্রুওয়ার্ম’ নামের মাংসখেকো পরজীবী শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসেস-এইচএইচএস।
এনবিসি নিউজ জানায়, যে ব্যক্তির দেহে পরজীবী শনাক্ত হয়েছে, সম্প্রতি এল স্যালভাদর ভ্রমণ করেন। তার শরীরে স্ক্রুওয়ার্মের সংক্রমণ গত ৪ আগস্ট নিশ্চিত করে সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন-সিডিসি ও ম্যারিল্যান্ড ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ।
এ বিষয়ে ম্যারিল্যান্ড ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ সোমবার দেওয়া বিবৃতিতে জানায়, আক্রান্ত ব্যক্তি সংক্রমণ থেকে সেরে উঠেছেন। তার বিষয়ে অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে, অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রাণীর মধ্যে পরজীবী ছড়ায়নি।
এইচএইচএস মুখপাত্র এমিলি জি. হিলার্ড এক বিবৃতিতে জানান, পরজীবীর প্রাদুর্ভাব হওয়া কোনো দেশ থেকে ভ্রমণের মাধ্যমে অ্যামেরিকায় মানুষের দেহে ‘নিউ ওয়ার্ল্ড স্ক্রুওয়ার্ম মিয়াসিস’ তথা মাছির লার্ভার পরাশ্রয়ী সংক্রমণের প্রথম ঘটনা এটি।
তিনি আরও জানান,আমেরিকায় এ সংক্রমণসৃষ্ট জনস্বাস্থ্যগত ঝুঁকি একেবারেই সামান্য।
এনবিসির খবরে উল্লেখ করা হয়, সংক্রমণের জন্য দায়ী পরজীবী বা নিউ ওয়ার্ল্ড স্ক্রুওয়ার্ম মাছির লার্ভা গবাদি পশুর পালের সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে। মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকোতে এ পরজীবীর ব্যাপকতা রয়েছে। এটি বন্যপ্রাণীর জীবননাশের পাশাপাশি গৃহপালিত প্রাণীর প্রাণহানিও ঘটাতে পারে।
মধ্য আমেরিকায় আশি ও নব্বইয়ের দশকে পরজীবী সংক্রমণের প্রাদুর্ভাব মারাত্মক রূপ নিয়েছিল। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে দুটি দশকে এর বিস্তার রোধ করা হয়। যদিও গত দুই বছরে সেটি আবার ফিরেছে ওই অঞ্চলে।
পরজীবীর সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়ার পর গত ১৫ আগস্ট টেক্সাসে যান অ্যামেরিকার সেক্রেটারি অব অ্যাগ্রিকালচার ব্রুক এল. রোলিন্স। তিনি স্ক্রুওয়ার্ম মোকাবিলায় পাঁচটি অংশে বিভক্ত পরিকল্পনা ঘোষণা করেন।
এ পরিকল্পনার মধ্যে আছে শত শত কোটি বন্ধ্যা মাছি জন্ম দেওয়া। পরজীবীর বিস্তার ঠেকাতে এসব মাছিকে আকাশ থেকে টেক্সাসের দক্ষিণাঞ্চল ও মেক্সিকোতে ছেড়ে দেওয়া হবে।
স্ত্রী মাছির সঙ্গে বন্ধ্যা পুরুষ মাছির মিলনে যে ডিম্ব তৈরি হয়, তা ফোটে না। এর মাধ্যমে মাছির বংশবিস্তার রোধ করা হয়। ষাটের দশকে সর্বশেষ ক্রুওয়ার্মের প্রাদুর্ভাবের সময় এ কৌশল কাজে লাগাতে পেরেছিল আমেরিকা।