শিরোনামঃ
ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে সংস্কৃতি উপদেষ্টার শোক বরেণ্য লোকসংগীত শিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় রাজনীতি অবসানের অঙ্গীকার নবনির্বাচিত জাকসু ভিপির সিনেমা দেখে প্রভাবিত হয়ে বাবাকে হত্যা, ছেলে গ্রেফতার ভিপি নুরের ওপর হামলা: সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাশেদ খান গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা বিএনপির লক্ষ্য: সালাহউদ্দিন আহমদ সাম্প্রদায়িক উত্থানের কারণে মবের ঘটনা বাড়ছে: গয়েশ্বর চন্দ্র অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছে: জি এম কাদের জাকসুর ভিপি জিতু, জিএস মাজহারুল, এজিএস ফেরদৌস ও মেঘলা ডেঙ্গুতে আরও ২ মৃত্যু
রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:০৬ পূর্বাহ্ন

আল জাজিরার অনুসন্ধানে শেখ হাসিনার শাসনের শেষ মুহূর্তের ভয়ংকর চিত্র উন্মোচন

নিজস্ব প্রতিবেদক / ১১৭ বার
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫

আলজাজিরার ইনভেস্টিগেটিভ ইউনিট ২৩ জুলাই ‘HASINA – 36 DAYS IN JULY’ শিরোনামে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রকাশ করেছে, যেখানে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের সময়কার ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়। এতে শেখ হাসিনার দেওয়া গোপন নির্দেশনা, সহিংসতা, সরকারি দমন-পীড়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিস্তৃত বিবরণ উঠে আসে।

তদন্ত অনুযায়ী, ১৮ জুলাই শেখ হাসিনা এক ফোনালাপে সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে বলেন, “আমার নির্দেশ তো আগেই দেওয়া হয়ে গেছে… ওপেন অর্ডার… মারবে, যেখানে পাবে সেখানে গুলি করবে… আমি তো এতদিন থামিয়ে রেখেছিলাম।” অন্য এক ফোনালাপে আন্দোলনকারীদের ওপর হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর কথাও উঠে আসে। তিন সপ্তাহব্যাপী আন্দোলনে অন্তত ১,৫০০ জন নিহত এবং ২৫ হাজারের বেশি আহত হয়। নিরাপত্তা বাহিনী ৩০ লাখ রাউন্ড গুলি ব্যবহার করেছে বলে তথ্য প্রকাশ করা হয়, যার সাথে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদনও সামঞ্জস্যপূর্ণ।

আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র ছাত্র আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে তদন্তে দাবি করা হয়, সরকারের চাপের মুখে পাঁচবার পোস্টমর্টেম রিপোর্ট বদলানো হয় এবং গুলির প্রমাণ মুছে ফেলা হয়। তার পরিবারকে পরবর্তীতে শেখ হাসিনার সঙ্গে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সাক্ষাতেও বাধ্য করা হয়। চিকিৎসকদের মতে, অনেক আন্দোলনকারী হেলিকপ্টার থেকে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।

আলজাজিরার নথিতে দেখা যায়, সহিংসতা ঢাকতে শেখ হাসিনার সরকার হঠাৎ ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়। আওয়ামী লীগ এই ফোনালাপ ও তথ্যকে ‘ভুয়া’ বলে দাবি করলেও আন্তর্জাতিক মহল বিষয়টিকে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে।

২০২৫ সালের ১ জুন শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ‘গণহত্যা’ ও ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’-এর অভিযোগ দাখিল হয়। ১০ জুলাই আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র গৃহীত হয়েছে এবং আগস্টে বিচার শুরু হবে। যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো নতুন সরকারের প্রতি জবাবদিহিতা ও মানবাধিকারের প্রতিশ্রুতি রক্ষার আহ্বান জানিয়েছে।

আলজাজিরার এই অনুসন্ধান বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি মোড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। গোপন নির্দেশ, দমন-পীড়নের ভয়াবহতা ও বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে দেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হতে পারে।


এ জাতীয় আরো খবর...