প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ফারহান ফাইয়াজের বিচার কাজে একজন শ্যুটারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা বাকি যারা শ্যুটার ছিল, প্রত্যেককে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। খুনিদের বাংলাদেশে কোনও জায়গা নেই।’ জুলাই আন্দোলনে নিহত ফারহান ফাইয়াজকে স্মরণ করতে গিয়ে এসময় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন প্রেস সচিব। শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে ফারহান ফাইয়াজসহ জুলাই যোদ্ধাদের স্মরণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘যারা আক্রমণ করেছিল সেই ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। অনেকে তাদের ফিরে আসার স্বপ্ন দেখে। ফারহান-ফাইয়াজরা যতদিন আমাদের সঙ্গে আছেন, এরা জীবনেও ফিরবে না। কোনোদিন না, আমরা যতদিন আছি, খুনিদের বাংলাদেশে কোনও জায়গা নেই।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘আমি সিটি হসপিটালে ফোন দিয়েছিলাম, দুঃখের বিষয়— তারা সেটা স্বীকার করতে চাচ্ছিলেন না। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ হচ্ছে পরিবারের মতো। সবাই জেনে যায়। এই যে আন্দোলনকে পুরো বাংলাদেশকে ট্রান্সফর্ম করায় শহীদ ফারহান ফাইয়াজের যে অবদান, সেদিনই আমরা সবাই জেনে গেছি। কী মহান একটা ছেলে, কী মহান একটা আন্দোলনের রূপকার।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘অনেকে বলে থাকেন— এই আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কী, এই ফারহান ফাইয়াজরা যতদিন আমাদের পাশে আছে, আমরা ফেল করি, আর যেই ফেল করুক— এটা ঠিকই বাংলাদেশকে ঠিক জায়গায় নিয়ে যাবে। ফারহানের খালা বললেন, তার আত্মা রেসিডেনশিয়ালে আছে, আমি বলবো, পুরো ঢাকা শহরে আছে। মেধাবী একটা ছেলে, বিজ্ঞানী হতে চেয়েছিল, যুক্তরাজ্য যেতে চেয়েছিল, তার আগে মনে করেছে— দেশকে আগে ঠিক করি। কী তার দেশপ্রেম। তারপর যখন পুরো ঢাকা শহর নামলো, আমরা তখন সবাই ফারহান ফাইয়াজ ছিলাম। এরকম একটা ঘটনা একটা জাতিকে ১০০ বছর এগিয়ে নেয়। অনেকে মনে করেন— জাতি পিছিয়ে পড়লো। না জাতি পিছিয়ে নেই। ওরা ঠিকঠাক এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা ফেল করলে আমাদের নর্দমায় ফেলে দেবে। আরেক গ্রুপ আসবে, যতক্ষণ না জাতি ঠিক হচ্ছে।’
শফিকুল আলম বলেন, ‘‘এটাকে আমি গণঅভ্যুত্থানের চেয়ে আমি বিপ্লব বলছি। কেননা, মনে হয়েছে যে, সব নদী এক হয়ে একটি জায়গায় মিলছে। এই বিপ্লব এই প্রজন্মের ছিল। এই বিপ্লব ছিল ফারহান ফাইয়াজদের। এই বিপ্লব সারা জীবনের জন্য বাংলাদেশকে পরিশুদ্ধ করে দিয়েছে। বাংলাদেশ খুবই ভাগ্যবান— এরা আমাদেরকে পথ দেখিয়েছে। এদের আত্মা আমাদের আশেপাশে আছে, বারবার বলছে— ‘তুমি ঠিক হয়ে যাও’। এদের আত্মা ঢাকা রেসিডেনশিয়ালের ঘাসে, ধুলায় আছে, আমার মধ্যে আছে। এরা যাবে না, এরা সারা জীবন আমাদেরকে পথ দেখাবে। আমরা শোকের মাসে এসেছি, আমি তো বলবো— এটা সিলেব্রেশন যে আমরা এই প্রজন্মকে পেয়েছিলাম। বাবা-মাকে স্যালুট যে, এনারা এসব ছেলেমেয়েকে জন্ম দিয়েছেন।’