কক্সবাজার শহরের উত্তরণ আবাসিক এলাকায় এক মর্মান্তিক ঘটনায় স্বামীকে জবাই করে হত্যার পর তার স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে বীরেল চাকমা নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। কক্সবাজার সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইলিয়াস খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের পর রক্তমাখা অবস্থায় পালানোর সময় স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে বীরেল চাকমা। পরে তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
ওসি ইলিয়াস খান স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, আটককৃত বীরেল চাকমা এবং নিহত রঞ্জন চাকমা ও তার স্ত্রী পূর্ব পরিচিত। তাদের সবার বাড়ি রাঙ্গামাটিতে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বীরেল চাকমা কয়েক মাস ধরে কক্সবাজারের ঝিলংজার উত্তরণ আবাসিকে ভাড়া থাকতেন। নিহত রঞ্জন ও তার স্ত্রী রাঙ্গামাটি থেকে আনারস বিক্রি করতে কক্সবাজারে এসেছিলেন এবং পরিচিত বীরেলের বাসায় আশ্রয় নিয়েছিলেন।
ওসি আরও জানান, শনিবার রাতে বীরেল ও রঞ্জন একসঙ্গে মদ পান করছিলেন। এর ফাঁকে বীরেল পাশের কক্ষে গিয়ে রঞ্জনের স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। নির্যাতিতা স্ত্রী দৌড়ে স্বামীর কাছে বিষয়টি জানালে বীরেল ও রঞ্জনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে বীরেল ছুরি দিয়ে রঞ্জনকে জবাই করে হত্যা করে এবং একটি ব্যাগ নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। তবে রক্তমাখা হাত দেখে স্থানীয় কয়েকজন তাকে আটক করে। পরে তারা ঘরে গিয়ে রঞ্জনের রক্তাক্ত মরদেহ এবং তার স্ত্রীর বিলাপ দেখতে পান। জিজ্ঞাসাবাদে বীরেল এই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে এবং নিহতের স্ত্রীও একই কথা জানিয়েছেন।
খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্তকে আটক করে এবং মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। নিহতের স্ত্রীকে ধর্ষণের আলামত থাকায় তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটিও উদ্ধার করেছে।
অন্য একটি সূত্র থেকে জানা যায়, বীরেল ও রঞ্জন চাকমা স্থানীয় সুপারি বাগানে কাজ করতেন। তবে আরেকটি সূত্র মতে, রঞ্জন চাকমা ও তার স্ত্রী রাঙ্গামাটি থেকে আনারস এনে কক্সবাজারে বিক্রি করতেন। স্থানীয়রা মনে করছেন, আশ্রয় দিয়ে রঞ্জনের স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হলে বাকবিতণ্ডা এবং পরবর্তীতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। যেহেতু তারা চাকমা পরিবার, তাই স্থানীয়রা তাদের বিষয়ে তেমন খোঁজখবর রাখতেন না।