ক্যান্সার—একটি ভয়ংকর রোগ, যার নাম শুনলেই মানুষ আতঙ্কে ভোগে। এটি শুধু একজন ব্যক্তির জীবনে বিপর্যয় ডেকে আনে না, বরং তার পরিবার ও আশপাশের মানুষদের জীবনেও গভীর প্রভাব ফেলে। প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে লক্ষাধিক মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে, যেকোনো বয়সেই মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
সবচেয়ে বেশি দেখা যাওয়া ক্যান্সারগুলোর মধ্যে রয়েছে কোলন (মলাশয়) ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার, ফুসফুস ক্যান্সার, রক্ত ক্যান্সার ও মস্তিষ্কের ক্যান্সার। যদিও ক্যান্সার পুরোপুরি নিরাময়ের নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ এখনো নেই, তবে বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন—সুস্থ জীবনযাপন ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস গ্রহণ করলে এই মরণব্যাধি অনেকটাই প্রতিরোধ করা সম্ভব।
বিশেষত কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে নিচের ৯টি খাবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে:
জিরা কেবল স্বাদ বাড়ায় না, এতে থাকা কামিনএলডিহাইড উপাদান অন্ত্রে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি ঠেকাতে কার্যকর। ফলে এটি কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
২. পেয়ারা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ পেয়ারা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও অন্ত্রের ক্যান্সার কোষের বিকাশ রোধ করে, যা কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক।
৩. সবুজ শাকসবজি এইসব সবজিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আয়রন ও খনিজ উপাদান, যা অন্ত্রের কোষকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে।
৪. কলা পটাশিয়াম সমৃদ্ধ কলা হজমক্রিয়া উন্নত করে, ক্লান্তি দূর করে এবং কোলনের স্বাস্থ্য রক্ষা করে। এটি পাকস্থলির আলসার ও কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে উপকারী।
৫. ঢেঁড়শ ঢেঁড়শে থাকা এনজাইম অন্ত্রের কোষকে শক্তিশালী করে এবং ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদানের প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
৬. মাছ মাছে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন ই ক্যান্সার প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর। এটি কোলনসহ বিভিন্ন অঙ্গের ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি ঠেকায়।
৭. দই প্রতিদিন এক কাপ দই খেলে অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বাড়ে, যা কোলনের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
৮. পূর্ণ শস্য বার্লি, ওটস, ব্রাউন রাইস, ভূট্টা ইত্যাদি পূর্ণ শস্যে রয়েছে প্রচুর ফাইবার যা অন্ত্র পরিষ্কার রাখে এবং কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
৯. চীনাবাদাম চর্বিমুক্ত বাদাম বা বাদামের মাখনে থাকা ওমেগা-৩ ও ম্যাগনেশিয়াম অন্ত্রের ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করে।
সুস্থ ও ক্যান্সারমুক্ত জীবন চাইলে খাদ্যাভ্যাসে এই উপকারী উপাদানগুলো নিয়মিত অন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি। একবারে কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ না হলেও ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস পাবে।