রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪০ অপরাহ্ন

গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৩৮ বার
প্রকাশ: শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫
নেতানিয়াহু

গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে ইসরায়েলের রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পুরো উপত্যকা দখলের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশের কয়েকঘণ্টা পর শুক্রবার (৮ আগস্ট) ভোরবেলা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা দখলের প্রস্তুতি নেবে। একই সময় তারা সাধারণ মানুষের কাছে ত্রাণ সহায়তাও সরবরাহ করবে। উল্লেখ্য, উপত্যকার উত্তরে অবস্থিত গাজা সিটি ওই অঞ্চলের বৃহত্তম নগর।

এক ইসরায়েলি কর্মকর্তার বরাতে অ্যাক্সিওসের সাংবাদিক বারাক রাভিদ বলেছেন, পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে গাজা সিটি থেকে বেসামরিকদের সরিয়ে নিয়ে সেখানে স্থলভিত্তিক সামরিক অভিযান শুরু করা।

বৃহস্পতিবার ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল গাজা পুরোপুরি দখলে নেবে। তবে তারা এটি শাসন করতে চান না বলেও দাবি করেন নেতানিয়াহু।

তিনি বলেন, আমরা নিরাপত্তা বেষ্টনী চাই, তবে সেখানে সরকার হিসেবে থাকতে চাই না।

তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে এই অঞ্চল আরব বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে, যদিও এ দায়িত্ব কে নেবে বা কীভাবে শাসন হবে, সে বিষয়ে তিনি বিস্তারিত বলেননি।

এই মন্তব্যের কিছুক্ষণ পর নেতানিয়াহু একটি সীমিত পরিসরের মন্ত্রীসভা বৈঠকে বসেন, যেখানে গাজার আরও কিছু অঞ্চল দখলের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়। তবে সাপ্তাহিক পূর্ণ মন্ত্রিসভার বৈঠক না হওয়া পর্যন্ত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে না বলে জানিয়েছে দুইটি সরকারি সূত্র।

ইসরায়েলি সামরিক প্রধান ইয়াল জামির আগের এক বৈঠকে গাজায় অভিযান সম্প্রসারণের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন বলে একাধিক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।

নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, মন্ত্রিসভার অধিকাংশ সদস্য বিশ্বাস করেন যে বিকল্প পরিকল্পনাগুলো হামাসকে পরাজিত করতে পারবে না এবং বন্দিদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না।

প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় গাজার এমন এলাকাগুলোকে ধাপে ধাপে দখলের বিষয় বিবেচনায় আনা হচ্ছে, যেগুলোর এখনও সেনা নিয়ন্ত্রণে আসেনি। কোনও কোনও এলাকায় ফিলিস্তিনিদের আগেই সরিয়ে দেওয়ার জন্য কয়েক সপ্তাহ সময়ও দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।

এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ২০০৫ সালের সিদ্ধান্ত পাল্টে যাবে, যেখানে ইসরায়েল গাজা থেকে সেনা ও নাগরিক সরিয়ে নিয়েছিল, যদিও সীমান্ত, আকাশপথ এবং বিদ্যুৎ-পানি সরবরাহ তখনও ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণেই ছিল।

ডানপন্থি দলগুলো মনে করে, ওই সময় গাজা ছাড়ার সিদ্ধান্তের কারণেই ২০০৬ সালের নির্বাচনে হামাস সেখানে ক্ষমতায় আসে।

তবে নেতানিয়াহুর সাম্প্রতিক বক্তব্য থেকে স্পষ্ট নয় যে, ইসরায়েল স্থায়ী দখলের পরিকল্পনা করছে নাকি এটি একটি সাময়িক সামরিক অভিযান হবে। ইসরায়েল বারবার বলেছে, তারা হামাসকে নির্মূল ও জিম্মিদের মুক্ত করতেই এই যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে, নেতানিয়াহুর বক্তব্যকে ‘আলোচনার বিপরীতে একপ্রকার অভ্যুত্থান’ হিসেবে উল্লেখ করেছে হামাস। এক বিবৃতিতে তারা বলে, নেতানিয়াহু আগ্রাসন বৃদ্ধি এটা স্পষ্ট করেছে, তিনি জিম্মিদের উৎসর্গ করতে চাইছেন।


এ জাতীয় আরো খবর...