গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলা গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা (Global Sumud Flotilla) এখন আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। এই বহুজাতিক নৌযান অভিযানে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন দেশের মানবাধিকারকর্মী, চিকিৎসক, আইনজীবী, সাংবাদিক, শিল্পী ও সাধারণ নাগরিক। তাঁদের লক্ষ্য—অবরুদ্ধ গাজাবাসীর পাশে দাঁড়ানো এবং চলমান অবরোধ ভেঙে মানবিক করিডর প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা।
এই ফ্লোটিলায় অন্তত ৪৪ টিরও বেশি দেশ থেকে প্রতিনিধিত্ব এসেছে। ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা কর্মীরা একসাথে এক কণ্ঠে গাজার মানুষের প্রতি সংহতি প্রকাশ করছেন।
ইউরোপ থেকে: স্পেন, ইতালি, গ্রিস, ফ্রান্স, জার্মানি, সুইডেন, আয়ারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য, মানবাধিকার আইনজীবী, শিক্ষাবিদ ও পরিবেশ আন্দোলনকর্মীরা যোগ দিয়েছেন।
মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা থেকে: টিউনিসিয়া, আলজেরিয়া, মরক্কো, জর্ডান, লেবানন ও তুরস্কের কর্মীরা সরাসরি অংশ নিচ্ছেন।
এশিয়া থেকে: ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, জাপান ও বাংলাদেশসহ একাধিক দেশের সামাজিক আন্দোলনকর্মী ও ছাত্রনেতারা যোগ দিয়েছেন।
লাতিন আমেরিকা থেকে: চিলি, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো ও কিউবার প্রতিনিধি রয়েছেন।
উত্তর আমেরিকা থেকে: যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন, প্রবাসী ফিলিস্তিনি সম্প্রদায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অংশগ্রহণ করছেন।

অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে রয়েছেন–
চিকিৎসক ও নার্সরা, যারা গাজায় জরুরি চিকিৎসা সহায়তা দিতে প্রস্তুত।
মানবাধিকার আইনজীবী, যারা আন্তর্জাতিক আইনের আলোকে অবরোধ ভাঙার বৈধতা তুলে ধরছেন।
সাংবাদিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতারা, যারা প্রতিটি ঘটনা নথিভুক্ত করছেন।
শান্তিকর্মী, ছাত্রনেতা, পরিবেশ আন্দোলনকর্মী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা, যারা গাজার পাশে মানবিক বার্তা নিয়ে দাঁড়িয়েছেন।
এঁরা ছাড়াও এই বহরে মানবাধিকারকর্মী, পরিবেশকর্মী, আইনজীবী, সংসদ সদস্য, শিক্ষার্থী এবং ক্রীড়া ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ সংহতি প্রকাশের জন্য যোগ দিয়েছেন।

এই ফ্লোটিলায় বেশ কিছু আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত ব্যক্তিত্ব যোগ দিয়েছেন, যা এই উদ্যোগকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন:
গ্রেটা থুনবার্গ: সুইডেনের বিশ্বখ্যাত জলবায়ু কর্মী।
লিয়াম কানিংহাম: আয়ারল্যান্ডের জনপ্রিয় অভিনেতা, যিনি গেম অফ থ্রোনস সিরিজে অভিনয়ের জন্য পরিচিত।
মান্দলা ম্যান্ডেলা: দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী কিংবদন্তী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি এবং একজন রাজনীতিবিদ।
নওইস ডোলান: আইরিশ ঔপন্যাসিক।
আদা কোলাউ: স্পেনের বার্সেলোনা শহরের সাবেক মেয়র।
রিমা হাসান: ইউরোপীয় পার্লামেন্টের একজন ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত ফরাসি সদস্য।
সুজান সার্যান্ডন: অস্কার বিজয়ী মার্কিন অভিনেত্রী ও মানবাধিকার কর্মী।
হুয়াইদা আরাফ: ফিলিস্তিনি-আমেরিকান আইনজীবী এবং মানবাধিকার কর্মী।

বিশ্বজুড়ে খ্যাতিমান ব্যক্তিদের এই অংশগ্রহণ ফ্লোটিলার উদ্দেশ্যকে শুধু মানবিক উদ্যোগ হিসেবে সীমাবদ্ধ রাখেনি; বরং গাজার সংকটকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও দৃশ্যমান করে তুলেছে। এ কারণে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা এখন কেবল একটি নৌ-অভিযান নয়, বরং মানবিক সংহতির এক শক্তিশালী প্রতীক হয়ে উঠছে।