যুক্তরাষ্ট্রে শ্রমবাজারের দুর্বলতার ইঙ্গিতে বিশ্ববাজারে টানা চতুর্থ দিনের মতো স্বর্ণের দাম বেড়েছে। ডলারের দরপতন ও ট্রেজারি বন্ডের ফলন কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে স্বর্ণের দিকে ঝুঁকছেন। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, চলতি বছর সেপ্টেম্বরে ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমাতে পারে এই প্রত্যাশাই স্বর্ণের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা টিকিয়ে রেখেছে।
মঙ্গলবার (০৫ আগস্ট) গ্রিনিচ মান সময় (জিএমটি) ২টা ৩৯ মিনিটে স্পট গোল্ডের দাম ০.১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় প্রতি আউন্সে ৩ হাজার ৩৭৫.৮৯ ডলার। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফিউচার মার্কেটেও স্বর্ণের দাম ০.১ শতাংশ বেড়ে হয় ৩ হাজার ৪৩০.৪০ ডলার।
ডলার সূচক এক সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে অবস্থান করছে, ফলে অন্যান্য মুদ্রার ধারকদের জন্য স্বর্ণের দাম আরও সাশ্রয়ী হয়েছে। একই সঙ্গে ১০ বছরের মার্কিন ট্রেজারি বন্ডের ইল্ড এক মাসের মধ্যে সর্বনিম্নে পৌঁছেছে।
ওয়ানডা’র জ্যেষ্ঠ বাজার বিশ্লেষক কেলভিন ওং বলেন, ‘স্বল্পমেয়াদি দৃষ্টিকোণ থেকে স্বর্ণের বাজার ইতিবাচক। ফেডারেল রিজার্ভ এখনো সেপ্টেম্বরেই সুদের হার কমাতে প্রস্তুত আছে-এটাই বাজারের মূল প্রত্যাশা।’
জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যাশার চেয়ে কম হারে কর্মসংস্থান হয়েছে। পাশাপাশি মে ও জুন মাসের নন-ফার্ম পে-রোল তথ্য সংশোধন করে কমিয়ে ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৮ হাজারটি চাকরি, যা শ্রমবাজারের দুর্বলতার স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে।
এদিকে সান ফ্রান্সিসকো ফেড ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট মেরি ডালি সোমবার (০৪ আগস্ট) বলেন, ‘শ্রমবাজারে দুর্বলতার স্পষ্ট লক্ষণ দেখা যাচ্ছে এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে। তাই সুদ কমানোর সময় ঘনিয়ে এসেছে।’
স্বর্ণ ঐতিহ্যগতভাবে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার সময় নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত হয় এবং সাধারণত কম সুদের হারের পরিবেশে এর দাম বেড়ে থাকে।
দেশের বাজারে টানা ২ দফায় বাড়ানোর পর অবশেষে স্বর্ণের দাম কমিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। নতুন দর অনুযায়ী, ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৭১ হাজার ৬০১ টাকা। পাশাপাশি ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ লাখ ৬৩ হাজার ৭৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ১ লাখ ৪০ হাজার ৪০০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ১২৭ টাকা।