রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:১৭ অপরাহ্ন

ছোট ফেনী নদী পাড়ের মানুষের কান্না থামছেইনা

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৪২ বার
প্রকাশ: সোমবার, ২৮ জুলাই, ২০২৫

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার ছোট ফেনী নদীর পাড়ের মানুষের জীবনে নেমে এসেছে বিভীষিকা। প্রতিদিন ভাঙছে নদীর পাড়, বিলীন হচ্ছে, ঘরবাড়ি, মসজিদ, দোকান, কৃষি জমিসহ জীবনের সবকিছু। অথচ এসব মানুষের দীর্ঘশ্বাস, কান্না, আর্তনাদ যেন কেউ শুনছে না। কেউ দেখছে না।

২০২৪ সালের বন্যার পানির প্রভাবে মুছাপুর রেগুলেটর নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পর থেকে ছোট ফেনী নদীর দুপাশে অস্বাভাবিক জোয়ারে ভাঙন দেখা দেয়। চর মজলিশপুর, বগাদানা, চরদরবেশ, চর চান্দিয়া চর পারবতি, চর হাজারী ও মুছাপুর ইউনিয়নের নদীর পাড়ের অংশে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে নদী পাড়ের বসবাসরত ২০ হাজারের অধিক পরিবার। শতশত পরিবারের সহায়সম্পদ ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ছোট ফেনী নদী সেতু, ইতালি মার্কেট তালতলা এলাকা, কাজির হাটসংলগ্ন বাঁশ বাজার এলাকায় সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অস্বাভাবিক জোয়ারে লোনাপানি প্রবল স্রোতে লোকালয়ে ঢুকতে। এতে করে নদীর ২ পাশে ভাঙতে দেখা যায়। স্থানীয়রা বলছেন, অস্বাভাবিক জোয়ার ভাটার কারণে ভাঙছে পাড়সহ পাড়ে থাকা পরিবারগুলোর ঘরবাড়ি। এতে করে পরিবার গুলো চরম আতঙ্কে দিন পার করছেন।

সাইয়েদপুর এলাকার মো. হানিফ নামের স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ঐ দেখছেন এটি আমার বাড়ি। নামাজ পড়ে নদীর কাছে আসলাম জোয়ারের কী অবস্থা দেখতে! গতকাল ঠিক এ সময় (দুপুর) খাওয়ার পূর্ব মহূর্তে যেভাবে জোয়ার এসেছে দুপুরের খাওয়ার খেতে পারি নাই। আজও এমন হয় কিনা ভয়ে দেখতে আসলাম। মুছাপুর রেগুলেটর নির্মাণ করা সময়ের দাবি। অন্তত মুছাপুর রেগুলেটর নির্মাণের আগে যদি বাঁকা নদী সোজাও করে দেয় তাহলে অন্তত কিছুটা হলেও একটু রক্ষা পেতাম। কে শুনে আমাদের কথা! না শুনছে, সমাজ, রাষ্ট্র-সরকার।

স্থানীয় ওয়ালী-আল হায়দারিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মজিবুর রহমান বলেন, মুছাপুর ক্লোজারের পুনঃনির্মাণ দীর্ঘ সময় ধরে ঝুলে থাকায় ছোট ফেনী নদীর উপকূলে বসবাসরত হাজারো মানুষ আজ ভয়াবহ অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। প্রতিদিনই নদীভাঙনের মুখে পড়ছে তাদের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। নদীর ধারে বসবাসরত গরিব কৃষকদের বহু জমি ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। যেসব জমি তারা বর্গা নিয়ে চাষ করতেন, এখন সেগুলো হারিয়ে জীবিকা নির্বাহে চরম সংকটে পড়েছেন।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো নদীঘেঁষা এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এবং সেখানকার শিক্ষার্থীরা এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। জোর দাবি জানাচ্ছি বিলম্ব না করে অতিদ্রুত মুছাপুর ক্লোজারের পুনঃনির্মাণ কাজ শুরু করা হোক।

এছাড়া লোনাপানি যদি কৃষি জমিতে ঢুকছে এতেকরে কৃষির উপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। কৃষকদের কাছ থেকে জানা যায় এলাকার কৃষকরা জমি গুলো ২-৩ ফসলি। এখানে আউশ, আমন পরবর্তী তরমুজ সহ নানা রবিশস্য চাষাবাদ করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। এ লোনা পানির কারণে জমিগুলো চাষাবাদ করা সম্ভব হবে না।


এ জাতীয় আরো খবর...