গাজীপুরের টঙ্গীতে ম্যানহোলে পড়ে নিখোঁজ নারীর পরিচয় মিলেছে। একটি ওষুধ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানে সেলসম্যান হিসেবে কাজ করতেন তিনি। রোববার (২৭ জুলাই) রাত সোয়া ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকায় ঢাকনাবিহীন ম্যানহোল নিখোঁজের পর দীর্ঘ সাড়ে ১৬ ঘণ্টা পার হলেও এখনও উদ্ধার হয়নি ওই নারী।
স্থানীয় অধিবাসী ও নিহতের স্বজনদের দাবি, ড্রেনের রক্ষণাবেক্ষণ সংস্থা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিস বলছে, নিখোঁজ ওই নারীকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা।
নিখোঁজ তাসনিম সিদ্দিকী জ্যোতি রাজধানীর মিরপুরে ১০ নম্বর সেক্টরে বসবাস করতেন। তিনি ওষুধ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মনি ট্রেডিংয়ের সেলসম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলায়।
নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল রাত সোয়া ৯টায় হোসেন মার্কেট এলাকায় স্থানীয় ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ওষুধ বিপণনের কাজে এসেছিলেন সেলসম্যান তাসনিম সিদ্দিকী জ্যোতি। বৃষ্টিপাত ও বৈরী আবহাওয়ায় হঠাৎ অসাবধানতাবশত হাসপাতালের সামনে ঢাকনাবিহীন ম্যানহোলে পড়ে যান তিনি। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়। এরপর ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট রাত দেড়টা পর্যন্ত তাদের উদ্ধার অভিযান চালায়। বৈরী আবহাওয়ায় উদ্ধার কাজ স্থগিত রেখে পরদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ফের উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় সিটি করপোরেশন ও পুলিশ প্রশাসন।
স্থানীয়রা বলছেন, ম্যানহোলটি দীর্ঘ দিন ধরে এভাবে ঢাকনাবিহীন থাকলেও এটি সংস্কার ও মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। হাসপাতাল, সিটি করপোরেশন ও সড়ক বিভাগের গাফিলতির কারণে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। ম্যানহোলে নিখোঁজের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন নিহত তাসনিম সিদ্দিকীর স্বজনরা। তাসনিমকে এভাবে হারানোর জন্য হাসপাতাল ও সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ও তাদের নজরদারির অভাবকে দায়ী করেছেন তারা।
তাসনিম সিদ্দিকীর চাচাতো বোন বলেন, রাতে ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ওষুধ বিপণনের কাজে এসেছিলেন জ্যোতি। এরপর ম্যানহোলে পড়ে তার নিখোঁজের খবর পাই। কিন্তু দুপুর হয়ে গেলেও বোনের সন্ধান পাইনি। আমরা চাই জীবিত না হোক অন্তত তার লাশটি যেন পাই।
এদিকে, উৎসুক লোকজনের অহেতুক ভিড়ের কারণে উদ্ধার তৎপরতা বিঘ্ন ঘটেছে। তবে ঘটনাস্থলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি দেখা গেছে।
টঙ্গী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শাহীন আলম বলেন, ঘটনার পর উদ্ধারকারী ১৫ সদস্যের দল ম্যানহোলের ভেতর নিখোঁজ ওই নারীর সন্ধানে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। ম্যানহোলটির গভীরতা প্রায় দশ ফুট। দিনভর বৃষ্টি হওয়ায় ম্যানহোলটি পানিতে ভরপুর হয়ে গেছে। এখন সিটি করপোরেশনের সহায়তায় ড্রেনের ঢাকনা পর্যায়ক্রমে উঠিয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে তারা।