রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (১৮ আগন্ট) ওয়াশিংটনে এ বৈঠকে যোগ দেয়ার কথা জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নেতাদের। বৈঠকে ইউক্রেনের অবস্থানকে শক্তিশালী করতেই উপস্থিত থাকবেন তারা।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লেয়েন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির বিশেষ অনুরোধেই তারা এ বৈঠকে যাচ্ছেন।
এ বৈঠকের আগে রোববার (১৭ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ ও জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎসসহ মিত্রদের নিয়ে একটি বৈঠকের আয়োজন করেন। বৈঠকের উদ্দেশ্যগুলোর একটি ছিল—যুদ্ধ বন্ধের ক্ষেত্রে ইউক্রেনের জন্য যেন যথেষ্ট পরিমাণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। আর এই নিরাপত্তায় যেন যুক্তরাষ্ট্রও ভূমিকা পালন করে।
ইউক্রেনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অব্যাহত রাখা এখন সবচেয়ে জরুরি। আর এ মুহূর্তে মার্কিন রাজনীতিতে ইউক্রেন ইস্যু নিয়ে নানা বিতর্ক চলছে। তাই জেলেনস্কি চান, ইউরোপীয় নেতাদের উপস্থিতি ওয়াশিংটনে একটি স্পষ্ট বার্তা দেবে। আর তা হলো, ইউক্রেনকে সাহায্যের প্রশ্নে ইউরোপীয় পশ্চিমা দেশগুলো একতাবদ্ধ।
বার্লিনে জার্মান সরকারের মুখপাত্র স্টেফান করনেলিয়াস রোববার বলেছেন, জার্মান চ্যান্সেলর মার্স আলোচনায় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জার্মানির প্রচেষ্টা তুলে ধরবেন। পাশাপাশি ইউরোপীয় নিরাপত্তার নিশ্চয়তা, সীমান্তসংক্রান্ত প্রশ্ন, রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখা এবং ইউক্রেনকে সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা অব্যাহত রাখার বিষয়ে আলোচনা হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রেসিডেন্ট ফন ডেয়ার লেয়েন অপর বিবৃতিতে জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির অনুরোধে আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে ইউরোপের অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে নিয়ে হোয়াইট হাউসে বৈঠকে অংশ নেব। তবে কারা কারা থাকবেন তা তিনি জানাননি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে ইউক্রেন ইস্যু ক্রমেই গূরুত্ব হারাচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনে সাহায্যের পরিমাণ সীমিত করার ইঙ্গিত দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় নেতাদের উপস্থিতি শুধু কূটনৈতিক সংহতির প্রতীকই নয়, বরং ইউক্রেনের পক্ষে চাপ তৈরির কৌশলও বটে।
এছাড়া জেলেনস্কি একা গেলে হয়তো এ বৈঠকটি ইউক্রেনের জন্য কম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ত। কিন্তু ইউরোপীয় নেতারা পাশে থাকায় যুক্তরাষ্ট্রও বুঝতে পারবে, ইউক্রেনের স্বাধীনতা রক্ষার প্রশ্নে পশ্চিমারা কোনো ছাড় দেবে না। এমনটাও মনে করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।