যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া অবৈধভাবে ভারতীয় বাঙ্গালি মুসলিম নাগরিকদের বাংলাদেশে পুশইন বন্ধ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সরকার শতশত ভারতীয় মুসলিমকে বাংলাদেশে পুশইন করেছে বলে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ আহ্বান জানায় সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে শত শত বাঙালি মুসলিমকে যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই বাংলাদেশে পুশইন করেছে মোদি সরকার।
ভারত সরকারের দাবি, তারা অবৈধ অভিবাসী। তবে তাদের মধ্যে অনেকেই বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলির ভারতীয় নাগরিক। ভারত সরকারের উচিত, পুশইনের শিকার যে কারও জন্য মৌলিক পদ্ধতিগত সুরক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করা এবং নিরাপত্তা বাহিনী ও সীমান্তরক্ষীরা যাতে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ না করে তা নিশ্চিত করা।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, গত এপ্রিলে ভারত-শাসিত কাশ্মীরে সশস্ত্র হামলায় ২৫ জন পর্যটক এবং একজন গাইড নিহত হওয়ার পর মুসলিমদের হয়রানি শুরু করে মোদি সরকার।
পুলিশ তাদের নাগরিকত্ব অস্বীকার করে তাদের ফোন, পরিচয়পত্র-নথি বাজেয়াপ্ত করে যার ফলে তারা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে না। আটককৃতদের অনেকে জানিয়েছেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্মকর্তা তাদের হুমকি এবং নির্যাতন করেছেন। কিছু ক্ষেত্রে বন্দুকের মুখে তাদের সীমান্ত পাড়ি দিতে বাধ্য করেছে।
ভারতের নাগরিক আসামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক খাইরুল আলমের সাক্ষাৎকার নিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
ওই শিক্ষক জানিয়েছেন, ২৬ মে বিএসএফ কর্মকর্তারা তার হাত-মুখ বেঁধে আরো ১৪ জনের সঙ্গে জোর করে বাংলাদেশে পুশইন করে। সীমান্ত পার হতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে মারপিট করে বিএসএফ এবং ৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে। দুই সপ্তাহ পরে তিনি ভারতে ফিরে যেতে সক্ষম হন।
সরকারি পদ্ধতি অনুসারে পরামর্শ এবং যাচাই-বাছাই ছাড়াই সীমান্ত দিয়ে ‘পুশ ইন’ বন্ধ করার অনুরোধ জানিয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কিন্তু নয়াদিল্লী সেই চিঠিগুলোর কোনো উত্তর দেয়নি বলে জানানো হয়েছে।