শিরোনামঃ
ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে সংস্কৃতি উপদেষ্টার শোক বরেণ্য লোকসংগীত শিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় রাজনীতি অবসানের অঙ্গীকার নবনির্বাচিত জাকসু ভিপির সিনেমা দেখে প্রভাবিত হয়ে বাবাকে হত্যা, ছেলে গ্রেফতার ভিপি নুরের ওপর হামলা: সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাশেদ খান গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা বিএনপির লক্ষ্য: সালাহউদ্দিন আহমদ সাম্প্রদায়িক উত্থানের কারণে মবের ঘটনা বাড়ছে: গয়েশ্বর চন্দ্র অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছে: জি এম কাদের জাকসুর ভিপি জিতু, জিএস মাজহারুল, এজিএস ফেরদৌস ও মেঘলা ডেঙ্গুতে আরও ২ মৃত্যু
রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:০৯ পূর্বাহ্ন

মানবতার দিশারি: মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবন ও আদর্শ

রেজওয়ান করিম / ৩৭ বার
প্রকাশ: শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

আগামীকাল, ১২ রবিউল আউয়াল, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী। এই দিনে পৃথিবীতে আগমন ঘটেছিল সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর। তার আগমন ছিল মানবজাতির জন্য এক বিরাট আশীর্বাদ। অন্ধকারাচ্ছন্ন, বর্বর সমাজে তিনি নিয়ে এসেছিলেন সত্য, ন্যায় ও শান্তির আলো। তার জীবন ও আদর্শ আজও আমাদের পথ চলার প্রেরণা।

জন্ম ও শৈশব

৫৭০ খ্রিস্টাব্দে আরবের মক্কার কোরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করেন হজরত মুহাম্মদ (সা.)। জন্মের আগেই তিনি পিতাকে হারান এবং ছয় বছর বয়সে হারান তার মাতাকেও। এরপর দাদা আবদুল মুত্তালিব এবং পরবর্তীতে চাচা আবু তালিবের তত্ত্বাবধানে তিনি বড় হন। ছোটবেলা থেকেই তার মধ্যে সততা, বিশ্বস্ততা ও উত্তম চরিত্রের গুণাবলি প্রকাশ পায়। তার সততার জন্য আরবের লোকেরা তাকে ‘আল-আমিন’ বা ‘বিশ্বস্ত’ উপাধি দিয়েছিল।

 

নবুয়ত লাভ ও ইসলামের প্রচার

৪০ বছর বয়সে মক্কার হেরা গুহায় ধ্যানরত অবস্থায় হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে ওহী আসে। জিবরাঈল (আ.)-এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তাকে নবুয়ত প্রদান করেন এবং ইসলাম প্রচারের নির্দেশ দেন। তিনি প্রথমে গোপনে ইসলাম প্রচার শুরু করেন এবং পরে প্রকাশ্যে দাওয়াত দিতে থাকেন। মক্কার তৎকালীন নেতারা তার প্রচারিত সত্যের বিরোধিতা করে। নানা রকম অত্যাচার ও নির্যাতন সত্ত্বেও তিনি ধৈর্য ও দৃঢ়তার সাথে তার মিশন চালিয়ে যান।

 

হিজরত ও মদিনা জীবন

মক্কায় যখন অত্যাচার চরম আকার ধারণ করে, তখন আল্লাহর নির্দেশে তিনি অনুসারীদের নিয়ে মদিনায় হিজরত করেন। এই হিজরত ইসলামের ইতিহাসে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। মদিনায় তিনি একটি আদর্শ ইসলামী সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন করেন। সেখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য শান্তি ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করেন। মদিনার সনদ ছিল একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ, যা ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করেছিল।

 

বিজয় ও বিদায় হজ

দীর্ঘ সংগ্রামের পর ৬৩০ খ্রিস্টাব্দে বিনা রক্তপাতে তিনি মক্কা বিজয় করেন। মক্কায় প্রবেশ করে তিনি ক্ষমা ও উদারতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। যারা তার ওপর নির্যাতন চালিয়েছিল, তাদের সবাইকে তিনি ক্ষমা করে দেন। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে তিনি জীবনের শেষ হজ পালন করেন এবং আরাফাতের ময়দানে তার ঐতিহাসিক বিদায় হজের ভাষণ দেন। এই ভাষণে তিনি মানবজাতির জন্য দিকনির্দেশনামূলক বার্তা দিয়ে যান, যা মানবাধিকারের ইতিহাসে এক মাইলফলক।

 

মহানবী (সা.)-এর আদর্শ

মহানবী (সা.) শুধু একজন ধর্মপ্রচারক ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক, সমাজ সংস্কারক, ন্যায়বিচারক ও শিক্ষাবিদ। তিনি সাম্য, মৈত্রী ও ভ্রাতৃত্বের ওপর জোর দিয়েছিলেন। তিনি গোত্রীয় ভেদাভেদ দূর করে মানব জাতিকে এক কাতারে দাঁড় করিয়েছিলেন। নারী জাতির অধিকার প্রতিষ্ঠা, দাসপ্রথার বিলোপ এবং জ্ঞান অর্জনের ওপর তার তাগিদ ছিল অপরিসীম।

তার জীবন থেকে আমরা শিক্ষা পাই সততা, ধৈর্য, ক্ষমা, উদারতা এবং মানবতার প্রতি ভালোবাসার। তিনি ছিলেন সব ধরনের উত্তম চরিত্রের অধিকারী। তার সুন্নাহ বা জীবন পদ্ধতি অনুসরণ করে আমরা আমাদের জীবনকে আলোকিত করতে পারি।

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর এই দিনে আমরা তার আদর্শকে বুকে ধারণ করার শপথ গ্রহণ করি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তার দেখানো পথে চলার তৌফিক দান করুন। আমিন।


এ জাতীয় আরো খবর...