রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ চতুর্থ বছরে পা দিয়েছে। প্রতিদিন নতুন আক্রমণ, পাল্টা প্রতিরোধ, কূটনৈতিক টানাপোড়েন এবং হাজারো মানুষের ভোগান্তি যেন আর শেষ হচ্ছে না। সম্প্রতি ইউক্রেন ঘোষণা দিয়েছে তাদের নতুন তৈরি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র “Flamingo” যুদ্ধক্ষেত্রে যুক্ত হয়েছে। এই অস্ত্র ৩,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাতে সক্ষম।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, Flamingo ক্ষেপণাস্ত্র তাদের প্রতিরক্ষায় নতুন মাত্রা যোগ করবে। আগামী বছর থেকে এটির গণউৎপাদন শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই অস্ত্র যুদ্ধের ভারসাম্যে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
অন্যদিকে রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অব্যাহত রেখেছে। এক সাম্প্রতিক হামলায় তারা ৫৭৪টি ড্রোন ও ৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এতে ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, নিহত হয়েছে অন্তত একজন এবং আহত হয়েছে কয়েকজন। মার্কিন মালিকানাধীন একটি শিল্পকারখানাও লক্ষ্যবস্তু ছিল।
জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আসলে শান্তিপূর্ণ আলোচনায় বসতে চান না। তিনি কেবল সময়ক্ষেপণ করছেন এবং যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করতে চাইছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নও একই মত দিয়েছে, বলেছে রাশিয়া যদি আলোচনায় আগ্রহী না হয় তবে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।
জাতিসংঘের হিসেবে এ যুদ্ধ শুরুর পর থেকে প্রায় এক কোটি ইউক্রেনীয় মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। হাজারো পরিবার সীমান্ত পেরিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছে। শিশুদের শিক্ষা, খাদ্য ও চিকিৎসা সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাধান এখনো অধরাই রয়ে গেছে। নতুন অস্ত্র ও অব্যাহত হামলা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি দ্রুত সমঝোতার পথ খুঁজে না পাওয়া যায়, তবে এই যুদ্ধ ইউরোপের স্থিতিশীলতাকে দীর্ঘমেয়াদে হুমকির মুখে ফেলবে।