রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যদি একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান আসে, তাহলে দুই দেশের মাঝে একটি বড় বাফার জোন বা নিরস্ত্রীকৃত অঞ্চল তৈরি হতে পারে। এই অঞ্চলের নজরদারির দায়িত্বে থাকতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। এটি একটি প্রাথমিক পরিকল্পনা, এবং পশ্চিমা মিত্ররা সম্ভাব্য নিরাপত্তার অংশ হিসেবে এ নিয়ে কাজ করছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ চারটি সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র ড্রোন, স্যাটেলাইট এবং গোয়েন্দা তথ্য ব্যবহার করে এই অঞ্চলে নজরদারি চালাবে। তবে তারা একা নয়, অন্য দেশও এতে অংশ নেবে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, ওই বাফার জোনে এমন দেশের সেনারা মোতায়েন হতে পারে যারা ন্যাটোর সদস্য নয়। এর জন্য বাংলাদেশ বা সৌদি আরবকে বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে মার্কিন সেনাদের ইউক্রেনে মোতায়েনের কোনো পরিকল্পনা নেই।
এই পরিকল্পনা কার্যকর করতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সম্মতি প্রয়োজন। যেহেতু ন্যাটোর সম্পৃক্ততা তার কাছে খুবই সংবেদনশীল বিষয়, তাই এই পরিকল্পনায় ন্যাটোর উপস্থিতি এড়ানো হচ্ছে। এর পরিবর্তে, দ্বিপাক্ষিক চুক্তি এবং অ-ন্যাটো দেশগুলোর সেনাদের উপস্থিতির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
এই প্রস্তাবটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের আলাস্কার বৈঠকের পর সামনে আসে। যদিও এরপর আলোচনা কিছুটা থেমে গেছে, তবুও মিত্র দেশগুলো কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের নেতৃত্বে কয়েকটি দেশ এই পরিকল্পনার রূপরেখা নিয়ে আলোচনা করেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার কথা জানিয়েছেন।
তবে গত শুক্রবার পুতিন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ইউক্রেনে বিদেশি সেনাদের উপস্থিতি তিনি মেনে নেবেন না। তার দাবি, যদি সত্যিই দীর্ঘস্থায়ী শান্তি আসে, তাহলে এমন বাহিনীর প্রয়োজন নেই। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, চুক্তি হলে রাশিয়া তা সম্পূর্ণভাবে মেনে চলবে।
এছাড়াও, বাফার জোন কার্যকর হলেও এর নিয়মকানুন এখনও নির্ধারিত হয়নি। পরিকল্পনার আরেকটি অংশ হলো ইউক্রেনের অর্থনীতি সচল রাখা। এর জন্য তুরস্ককে কৃষ্ণসাগরের মাধ্যমে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচল নিশ্চিত করতে বলা হতে পারে।