রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:৫১ অপরাহ্ন

লাখ টাকা ধার করে স্ত্রী-সন্তানসহ আত্মহননকারী মিনারুলের চল্লিশা করলো পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক / ১৬ বার
প্রকাশ: রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

রাজশাহীর পবা উপজেলার বামনশিকড় গ্রামে হৃদয়বিদারক এক ঘটনা ঘটেছে। ঋণের বোঝা আর চরম দারিদ্র্যের মুখে পড়ে স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানকে হত্যার পর নিজেও আত্মহনন করেছিলেন মিনারুল ইসলাম (৩৫)। গত ১৪ আগস্ট ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক ঘটনার এক মাস ১০ দিন পর, অর্থাৎ শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর), তার বাবা রুস্তম আলী প্রায় এক লাখ টাকা ধার করে ছেলে, পুত্রবধূ ও নাতি-নাতনিদের চল্লিশা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। এই অনুষ্ঠানে এক হাজার ২০০ মানুষকে খাওয়ানো হয়।

মিনারুল ইসলাম আত্মহত্যার আগে একটি চিরকুটে লিখে গিয়েছিলেন: “আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে।” তার স্ত্রী মনিরা খাতুন (৩০), ছেলে মাহিম (১৪) এবং মেয়ে মিথিলাকে (৩) হত্যার পর তিনি নিজেও আত্মহত্যা করেন।

শনিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, রুস্তম আলীর বাড়িতে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামের মানুষের ভিড়। বাড়ির সামনে ও পেছনে দুটি প্যান্ডেল করে খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। ভাতের সঙ্গে ডাল ও মুড়িঘণ্ট পরিবেশন করা হয়। রুস্তম আলী নিজেই সব তদারকি করছিলেন।

রুস্তম আলী জানান, সমাজে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী এবং মানসিক শান্তির জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। তিনি বলেন, “আশপাশের মানুষজন বলছিল চারজনের মরার কারণে বাড়ি ভারি ভারি লাগছিল। ছোট ছেলেপিলে ভয় পাচ্ছিল। অনুষ্ঠানটা করলাম যাতে ভয় ভাঙে। বাড়ি যেন পাতলা হয়।” তিনি আরও জানান, এই আয়োজনে প্রায় এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে, যা পুরোটাই ধার-দেনা করে জোগাড় করা হয়েছে। ধার শোধ করার জন্য তাকে ১৫-১৬ কাঠা জমির এক কাঠা বিক্রি করতে হবে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাঈদ আলী মুর্শেদ এই বিষয়ে মন্তব্য করেছেন যে, “ইসলামের দৃষ্টিতে এটা (চল্লিশা) না থাকলেও, কেউ মারা গেলে এটা করতে হয়। এটা আমাদের এলাকার রেওয়াজ।”


এ জাতীয় আরো খবর...