নরসিংদীতে সড়কে চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন শামীম আহত হয়েছেন। পরে তাকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
শনিবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে পৌর শহরের আরশীনগর মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
আহত পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সকালে নরসিংদী পৌর শহরে নিহমিত টহল চলছিল। আমি আরশিনগর এলাকা ক্রস করছিলাম। ওই সময় দুই জন লোক যানবাহন থেকে টাকা তুলছিল। আমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করলাম কিসের টাকা তোলা হচ্ছে। টাকা তুলতে তো হাই কোর্টের নিষেধাজ্ঞা আছে বলে জানালাম। এরই মধ্যে ৩০/৩৫ জন লোক অতর্কিত ভাবে আমার উপর হামলা চালায়। তারা আমাকে কিল ঘুশি মারা শুরু করেন। পরে আমাকে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘত করেন। আমি সঙ্গে সঙ্গে অচেতন হয়ে যাই। পরে সঙ্গে থাকা পুলিশ সদস্যরা আমাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। আমি চোখ খুলে দেখি হাসপাতালে। এখানে প্রাথিমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
গত কয়েদিন পূর্বে নরসিংদী সড়কে চাঁদাবার্জি বন্ধে জিরোটলারেন্স ঘোষণা করেন সহকারী পুলিশ সুপার শামিম আনোয়ার। এরপর থেকে বিভিন্ন প্রতিকূলতার শিকার হতে হয় তাকে। পরে নিজে ব্যাক্তিগত ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দেন তিনি। একই সঙ্গে তার উপর যে কোন সময় হামলার আশঙ্কার কথা জানান।
পৌরসভার সিএনজি অটোর রিক্সা স্ট্যান্ড এর ইজারাদার মো. আলমগীর বলেন, আমি পৌরসভা থেকে ২৫ লক্ষ টাকায় স্ট্যান্ডের ইজারা নিয়েছি। কিন্তু অতিরিক্ত সহকারী পুলিশ সুপার শামিম আনোয়ার প্রায়ই ইজারার টাকা তুলতে বাধা দেয়। এর আগেও আমাদের দুই জন লোককে ধরে নিয়ে জেলে পাঠিয়েছিল। আজকেও আরশীনগর এলাকায় গিয়ে আমাদের লোকজনকে আটক করছিল। এখন আমরা বৈধ ভাবে ইজারা নিয়ে কাজ করছি। আমাদের যদি কাজ করতে না দেয়। তাহলে আমাদেরকে সরকারকে দেয়া ২৫ লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দেয়া হোক।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামিম আনোয়ারের উপর হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন কোন ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে নরসিংদীর পুলিশ সুপার মেনহাজুল আলম বলেন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে টাকা তুলছিল কয়েকজন। তখন সদর সার্কেলের এএসপি আনোয়ার হোসেন তাদেরকে বলেন- ‘আপনারা এভাবে সিএনজি থেকে টাকা তুলতেছেন কেন, এটা নিয়ম না।’ পরে দুইজনকে জিজ্ঞাসা করার জন্য সাইডে নিলে তখন যারা সিএনজি থেকে টাকা তুলছিল তাদের লোকজন হামলা চালিয়ে দুইজনকে তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
পুলিশ সুপার মেনহাজুল আরও বলেন, মেডিকেল থেকে চিকিৎসা নিয়ে এখন সুস্থ আছেন আনোয়ার। এডিশনাল এসপিকে দিয়ে একটি টিম গঠন করেছি। যদি এ ঘটনায় কারও ব্যর্থতা থাকে তাহলে ব্যবস্থা নেব। আর যদি সব কিছু ঠিক থাকে তাহলে এটার বিষয় আইনগত ব্যবস্থা নেব।