সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদ মারা গেছেন। আজ সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের অভিজাত চট্টগ্রাম ক্লাবের আবাসিক কক্ষ থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, রাতে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল করিম আজ দুপুরে জানান, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল চট্টগ্রামের চিকিৎসকদের একটি দল চট্টগ্রাম ক্লাবে এসে সাবেক সেনাপ্রধানকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন এবং তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে এটি একটি স্বাভাবিক মৃত্যু বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
১৯৪৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জন্ম নেওয়া হারুন-অর-রশীদের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারীর ধলই ইউনিয়নে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার পর চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কর্মরত অবস্থায় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। স্বাধীনতাযুদ্ধে সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীর প্রতীক খেতাব দেয়।
২০০০ সালের ডিসেম্বরে সেনাপ্রধান হন হারুন-অর-রশীদ। ২০০২ সালের জুনে অবসরে যাওয়ার পর সরকার তাঁকে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ফিজির রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বও দিয়েছিল।
সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সাবেক মহাসচিব হারুন-অর-রশীদ ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট হিসেবে যোগ দেন ২০০৬ সালে।
কিন্তু জালিয়াতি ও অনিয়মের অভিযোগ এবং ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ তুঙ্গে উঠলে ২০১২ সালে হারুনকে কারাগারে যেতে হয়। পরে ‘স্বাস্থ্য ও সামাজিক অবস্থা’ বিবেচনায় তিনি জামিনে মুক্তি পান।
ডেসটিনির গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের এক মামলায় ২০২২ সালের ১২ মে হারুন-অর-রশিদকে চার বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।
সাবেক সেনাশাসক এইচ এম এরশাদের পর হারুন-অর-রশীদই প্রথম সাবেক সেনাপ্রধান, যাঁকে কোনো মামলায় দণ্ড নিয়ে কারাগারে যেতে হয়েছিল।