শিরোনামঃ
ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে সংস্কৃতি উপদেষ্টার শোক বরেণ্য লোকসংগীত শিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় রাজনীতি অবসানের অঙ্গীকার নবনির্বাচিত জাকসু ভিপির সিনেমা দেখে প্রভাবিত হয়ে বাবাকে হত্যা, ছেলে গ্রেফতার ভিপি নুরের ওপর হামলা: সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাশেদ খান গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা বিএনপির লক্ষ্য: সালাহউদ্দিন আহমদ সাম্প্রদায়িক উত্থানের কারণে মবের ঘটনা বাড়ছে: গয়েশ্বর চন্দ্র অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছে: জি এম কাদের জাকসুর ভিপি জিতু, জিএস মাজহারুল, এজিএস ফেরদৌস ও মেঘলা ডেঙ্গুতে আরও ২ মৃত্যু
রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:০৩ পূর্বাহ্ন

সিনেমা দেখে প্রভাবিত হয়ে বাবাকে হত্যা, ছেলে গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক / ১৭ বার
প্রকাশ: শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ভোলায় নিজ ছেলের হাতেই খুন হয়েছেন দারুল হাদীস কামিল মাদ্রাসার মুহাদ্দিস ও সদর উপজেলা পরিষদ মসজিদের খতিব মাওলানা আমিনুল হক নোমানী। এ ঘটনায় তার বড় ছেলে রেদোয়ানকে (১৭) আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ৩টায় ভোলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মো. শরীফুল হক।

তিনি জানান, নোমানী হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পরিবারের সকল সদস্যের পাশাপাশি তার ছেলেকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর তার ছেলের হাতে কাঁটা দাগ দেখে তাকে সন্দেহ করে পুলিশ হেফাজতে নেয়। সেখানে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাবাকে নৃশংসভাবে হত্যার দায় স্বীকার করেন রেদোয়ান। এরপর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি বাড়ির পাশের খাল থেকে উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও জানান, রেদোয়ানের চলাফেরা ছিল উশৃঙ্খল। সে মোবাইল ফোনে অনলাইন গেমে আসক্ত ছিল। তা নিয়ে নোমানী হুজুর ছেলেকে প্রায়ই শাসন করতেন। অতিরিক্ত শাসনের আক্রোশ থেকে বাবাকে খুন করার পরিকল্পনা করেন রেদোয়ান। বাবাকে হত্যার জন্য দেখতে থাকেন সাইকো মুভি। হত্যায় ব্যবহার করার জন্য দারাজ থেকে অর্ডার করেন একটি ছুরি।

পুলিশ সুপার আরও জানান, স্বাধীন চলাফেরায় বাবার বাধায় পড়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন রেদোয়ান। বিষয়টি পরিবারের সদস্যরা জানতে পেরে রেদোয়ানকে ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার খাসের এলাকায় তার মামার বাড়িতে রেখে আসেন। সেখানে থেকে তিনি নিজ বাবার গড়া মাওলানা এনামুল হক হাফিজিয়া নুরানি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতেন। ছাত্র হিসেবে রেদোয়ান অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন।

তিনি আরও জানান, মামার বাড়ি থেকেই রেদোয়ান গেল ৪ সেপ্টেম্বর ভোর রাতে বাবাকে খুন করার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু, দারাজ থেকে অর্ডার দেওয়া ছুরিটি আসতে দেরি হওয়ায় ৪ তারিখের পরিকল্পনা পণ্ড হয়। এরপর গেল ৫ সেপ্টেম্বর ছুরিটি হাতে পেলে হত্যার পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি কালো শার্ট ও একটি টি-শার্ট এবং একটি ক্যাপ সংগ্রহ করেন। এরপর ৫ সেপ্টেম্বর তার মা নানা বাড়িতে বেড়াতে গেলে ৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বাবাকে খুন করতে ভোলায় আসেন রেদোয়ান।

পুলিশ সুপার আরও জানান, এশা’রের নামাজ শেষে যখন তার বাবা ঘরে প্রবেশ করেন, তখন রেদোয়ান ঘরের সিঁড়ির উপরে বসে বাবাকে খুন করার পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা করেন। এরপর ঘরের দরজা নক দিলে তার বাবা জানতে চান দরজার ওই প্রান্তে কে? তখন ছেলে বলে, ‘বাবা, আমি রেদোয়ান, দরজা খোল।’ ঘরের দরজা খুলতেই বাবার বুকে ছুরি চালান রেদোয়ান। এরপর ভিতরে নিয়ে আরও ছুরি আঘাত করতে গেলে ছেলের কাছে মাফ চেয়ে বলেন, ‘বাবা, আমাকে মারিস না। আমাকে মাফ করে দে।’ কিন্তু, ছেলে বাবাকে খুন করতে অনড় ছিলেন। মুভির দেখা দৃশ্য অনুযায়ী বাবার পেটে ও ঘাড়ে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন ছেলে। এসময় ধস্তাধস্তিতে রেদোয়ানের হাতে ছুরি আঘাত হয় এবং হাতে থাকা তার মামার বাড়ির একটি ঘড়ি ছিঁড়ে পড়ে যায়। পরে, মানুষজন জড়ো হয়ে গেলে বাড়ির পিছনের খালে ছুরিটি ফেলে শার্ট ও ক্যাপ পরে পালিয়ে ওই দিন রাত ১১টায় মামার বাড়ি খাসের হাট পৌঁছান রেদোয়ান।

উল্লেখ্য, গেল ৬ সেপ্টেম্বর রাত ৯টায় ভোলার চরনোয়াবাদ এলাকায় নিজ বাড়িতে খুন হন মাওলানা আমিনুল হক নোমানী। এরপর পুলিশ ঘটনা স্থল থেকে একটি টি-শার্ট, মাস্ক এবং একটি ঘড়ি উদ্ধার করে। সেই উদ্ধার হওয়া আলামত থেকে তার ছেলেকে তজুমদ্দিন থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।


এ জাতীয় আরো খবর...