মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:০৮ অপরাহ্ন

দালাই লামার জন্মদিনে উত্তরসূরি নিয়ে জল্পনা

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৩৩ বার
প্রকাশ: বুধবার, ২ জুলাই, ২০২৫

তিব্বতি নির্বাসিত আধ্যাত্মিক নেতা দালাই লামার ৯০তম জন্মদিন উপলক্ষে ভারতের উত্তরাঞ্চলে শত শত অনুসারী জড়ো হয়েছেন। এই উদ্‌যাপনের মাঝেই জোরদার হচ্ছে জল্পনা চলছে, তিনি এবার হয়তো নিজের ভবিষ্যৎ উত্তরসূরি সম্পর্কে ইঙ্গিত দিতে পারেন।

বর্তমান দালাই লামা, যিনি ১৯৩৫ সালে লহামো ধোন্ডুপ নামে জন্মগ্রহণ করেন, মাত্র দুই বছর বয়সে ১৪তম পুনর্জন্ম হিসেবে স্বীকৃতি পান। ১৯৫৯ সালে চীনা শাসনের বিরুদ্ধে ব্যর্থ এক বিদ্রোহের পর তিনি ভারতে আশ্রয় নেন এবং সেখানে নির্বাসিত অবস্থায় তিব্বতি প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রতীক ও আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন।

একসময় তিনি ছয় শতাব্দী ধরে চলে আসা দালাই লামা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করার বিবেচনা করলেও, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে এই প্রতিষ্ঠান চলতেই থাকবে এবং তার উত্তরসূরি চীনের বাইরে জন্ম নেবেন ও তার দপ্তরই তাকে নির্বাচন করবে। তার এই অবস্থান বেইজিংয়ের কড়া আপত্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চীন দাবি করে, শুধুমাত্র কমিউনিস্ট পার্টিরই অধিকার আছে পরবর্তী দালাই লামাকে নিয়োগ দেওয়ার এবং তারা তাদের পছন্দের একজনকে ঘোষণাও দিতে পারে। তবে তিব্বতিরা ও বিশ্বের অধিকাংশ বৌদ্ধ এই ধরনের নিয়োগকে অবৈধ বলে মনে করেন।

তিব্বতি নির্বাসিত সংসদের সদস্য ইউডন আউকাটসাং স্বীকার করেছেন, সম্প্রদায়ের মধ্যে কিছুটা অনিশ্চয়তা রয়েছে। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, দালাই লামা তিব্বতিদের জন্য একটি ঐক্যের প্রতীক এবং তার অনুপস্থিতিতেও তিব্বতি আন্দোলন ও পরিচয় টিকে থাকবে।

তিব্বতি বৌদ্ধ বিশ্বাস অনুযায়ী, তাদের আধ্যাত্মিক নেতারা পুনর্জন্ম গ্রহণ করেন এবং পূর্বসূরির আত্মার বাহক হিসেবে কাউকে চিহ্নিত করেই পরবর্তী দালাই লামা নির্বাচন করা হয়। বর্তমান ১৪তম দালাই লামা, লহামো ধোন্ডুপ, মাত্র দুই বছর বয়সে পুনর্জন্ম হিসেবে স্বীকৃতি পান এবং চার বছর বয়সের আগেই সিংহাসনে বসেন।

১৯৫০ সালে চীন তিব্বতে আগ্রাসন চালিয়ে ১৯৫১ সালে তিব্বতকে নিজেদের অংশ ঘোষণা করে। ১৯৫৯ সালের বিদ্রোহ দমন এবং গণহত্যার পর দালাই লামা প্রায় ১০ হাজার অনুসারী নিয়ে ভারতে পালিয়ে এসে ধর্মশালায় নির্বাসিত সরকার গঠন করেন।

এখনো অনেক তিব্বতি নিজেদের মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়ার আশায় দিন গুনছেন। তাদেরই একজন, ৮৪ বছর বয়সী লোবসাং চোয়েডোন, যিনি দালাই লামার সঙ্গে দেশ ছেড়েছিলেন, তিনি আশা প্রকাশ করেন, হয় তিনি কিংবা তার পরবর্তী প্রজন্ম একদিন তিব্বতে ফিরবেন।

তার নাতি নগাওয়াং লুন্ডুপ, ভারতের মাটিতে জন্ম ও বেড়ে ওঠা সত্ত্বেও, তিব্বতের প্রতি গভীর টান অনুভব করেন এবং বলেন, “তিব্বত যদি চীনের দখলমুক্ত হয়, তাহলে ফিরে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি খুশি হবো।


এ জাতীয় আরো খবর...