‘২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান মেটিকুলাস ডিজাইনড হলে সমস্যা কোথায়?’—এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। শুক্রবার (৪ জুলাই) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের দুটি অংশ। ৫ জুন থেকে ১৮ জুলাই। এই অংশে অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট এবং নেতৃত্ব তৈরি করেছিল। আর ১৯ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সকল স্তরের ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে এবং আত্মদানে অভ্যুত্থান সফল হয়েছিল।’ অভ্যুত্থানের প্রথম এই অংশ ‘অবশ্যই মেটিকুলাসলি ডিজাইনড’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মাহফুজ আলম তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ‘৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ‘৭১-এর মার্চের অসহযোগ আন্দোলন এবং বাঙালি-বিহারি দাঙ্গা সবই ছিল সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার ফসল। সেসব ঘটনায় নেতৃত্ব যারা দিয়েছেন, তারা কেউই পাপবোধে ভোগেননি। বরং তাদের নিয়েই জাতি গর্ব করে।
তার প্রশ্ন—‘যদি সিরাজুল আলম খান, তাজউদ্দিন আহমদ, সিরাজ শিকদার, মওলানা ভাসানী কিংবা শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানকে পরাজিত করতে মেটিকুলাস ডিজাইনের অংশ হতে লজ্জা না পান, তবে ‘২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান পরিকল্পিত হলে বর্তমান প্রজন্ম গর্বিত হবে না কেন?’
মাহফুজ আলম তার পোস্টে জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানকে দুই পর্বে ভাগ করেন। তার ভাষায়, ‘৫ জুন থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত সময়টিতে অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট ও নেতৃত্ব গড়ে তোলা হয়, যা ছিল নিখুঁতভাবে পরিকল্পিত। এরপর ১৯ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার সর্বস্তরের অংশগ্রহণে আত্মদানের মধ্য দিয়ে অভ্যুত্থান সফল হয়।’
তিনি লিখেছেন, প্রথম পর্বে নেতৃত্বের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও বক্তব্য ছিল, যা ছাড়া দ্বিতীয় পর্বের বিদ্রোহ-প্রতিরোধ-আত্মত্যাগ সফল হতে পারতো না।
মাহফুজ আলম আরও জানান, ২ আগস্ট শুক্রবার রাতেও অভ্যুত্থান সামরিক মোড় নেওয়ার ঝুঁকিতে ছিল, তবে নেতৃত্বের দৃঢ়তায় সেই বিপদও এড়ানো গেছে।
তথ্য উপদেষ্টার মতে, জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত বিপ্লব যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি তার আগে পরিকল্পিত প্রস্তুতিও সমান অপরিহার্য। তিনি এই অভ্যুত্থানের ঘটনাপ্রবাহ তুলনা করেন ‘৬৮ সালের ঘেরাও আন্দোলন, ‘৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান এবং ‘৭১ সালের মার্চের আন্দোলনের সঙ্গেও।