গাজা উপত্যকায় অব্যাহত ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও অন্তত ৬২ জন ফিলিস্তিনি। নিহতদের অধিকাংশই খাদ্য সহায়তা নিতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আজ রোববার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার ভোর থেকে গাজাজুড়ে চালানো হামলায় বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অন্তত ৬২ জন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
নিহতদের মধ্যে ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এমন স্থানে, যেখানে বিতরণ হচ্ছিল খাদ্য সহায়তা। বিতরণ কার্যক্রমটি পরিচালনা করছিল গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)—যা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সহায়তায় পরিচালিত একটি সংস্থা। এর আগেও জিএইচএফ পরিচালিত স্থানে সহায়তা নিতে গিয়ে হামলার শিকার হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
অবশ্য ইসরায়েল গত সপ্তাহে ঘোষণা দিয়েছিল, মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে প্রতিদিন কিছু এলাকায় ‘কৌশলগত হামলা বিরতি’ দেওয়া হবে। ২৭ জুলাই থেকে কার্যকর হওয়া এই ঘোষণা বাস্তবে কোনো ফল দিচ্ছে না বলেই অভিযোগ উঠেছে। জাতিসংঘের তথ্যানুসারে, শুধু বুধবার ও বৃহস্পতিবার দুই দিনেই খাদ্য সহায়তা নিতে গিয়ে নিহত হয়েছেন আরও ১০৫ জন ফিলিস্তিনি।
জাতিসংঘ আরও জানায়, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলমান যুদ্ধে এখন পর্যন্ত খাদ্য সহায়তা নিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১,৩৭৩ জন ফিলিস্তিনি। এছাড়া অপুষ্টি ও অনাহারে মারা গেছেন আরও ১৬৯ জন, যাদের মধ্যে ৯৩ জনই শিশু।
গাজা থেকে পাওয়া বর্ণনায় জানা গেছে, সহায়তা নিতে আসা লোকজনকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলি সেনা এবং মার্কিন নিরাপত্তা ঠিকাদারদের (কন্ট্রাক্টর) গুলি চালানোর অভিযোগ রয়েছে।
এই মানবিক সংকটে আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে সাম্প্রতিক সময়ে আকাশপথে ত্রাণ পাঠিয়েছে জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর, স্পেন, জার্মানি ও ফ্রান্স। তবে জাতিসংঘের অধীনস্থ ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ ও অন্যান্য সংস্থার দাবি, আকাশপথে পাঠানো ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। স্থলপথেই সহায়তা প্রবাহ অব্যাহত রাখা জরুরি।