ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলি হামলায় একদিনে আরও ৩২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১৩ জন ত্রাণপ্রার্থী ছিলেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে। খবর আল জাজিরার।
এদিকে বেশ কয়েকটি চিকিৎসা সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, গাজা সিটির একটি আবাসিক ভবনে ইসরাইলি বিমান হামলায় আটজন নিহত হয়েছেন। শহরের তুফাহ এলাকায় অন্য এক হামলায় আরও দু’জন নিহত হন। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, বেড়ে চলা খাদ্য সংকটের মধ্যে একই দিনে অপুষ্টিতে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
এই হত্যাযজ্ঞ এমন এক সময়ে ঘটছে যখন ইসরাইল গাজা সিটিতে হামলা আরও তীব্র করেছে। দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা সম্প্রতি শহরটি দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন দিয়েছে, যা বাস্তবায়িত হলে লাখো ফিলিস্তিনিকে দক্ষিণ গাজায় গাদাগাদি করে বসবাস করতে বাধ্য করা হতে পারে।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল এই পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছে, এমনকি ইসরাইলি সেনাবাহিনীর ভেতর থেকেও এর বিরোধিতা এসেছে।
বৃহস্পতিবার আল জাজিরা জানিয়েছে, ইসরাইলি হামলায় উত্তর গাজার বড় অংশ এখন ‘নিষ্প্রাণ ধ্বংসস্তূপে’ পরিণত হয়েছে। গাজা সিটির বাসিন্দারা নতুন করে বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কায় আতঙ্কিত, কারণ শহর ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে ইসরায়েল তাদের আরও দক্ষিণে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলি ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের যোদ্ধারা। এদিন ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।
হামাসের হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে টানা অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী অন্যান্য দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
কিন্তু বিরতির দু’মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় অভিযান শুরু করে আইডিএফ।
এছাড়া গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। পাশাপাশি উপত্যকাটিতে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও রয়েছে ইসরাইল।