নাহিদ লেখেন, শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা অর্জনে অবদান ও ত্যাগ স্বীকার করা হলেও তার শাসনামলে সংঘটিত জাতীয় বিপর্যয়ও স্মরণ রাখা জরুরি। তার ভাষায়, মুজিবের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ভারতের একটি ‘উপনিবেশিক রাষ্ট্রে’ পরিণত হয়, ১৯৭২ সালে জনবিরোধী সংবিধান প্রণয়ন করা হয় এবং লুটপাট, রাজনৈতিক হত্যা ও একদলীয় বাকশাল শাসনের ভিত্তি স্থাপন হয়।
তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতির আড়ালে ‘মুজিব পূজা’ ও ‘মুক্তিযুদ্ধ পূজা’ জনগণের ওপর দমনপীড়নের হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল, যা গণতন্ত্রের আড়ালে আধুনিক জমিদারি ব্যবস্থায় রূপ নিয়েছিল। যদিও মুক্তিযুদ্ধ ছিল সকল নাগরিকের সংগ্রাম, তবে আওয়ামী লীগ দেশকে নিজেদের সম্পত্তি মনে করে মুজিবের নাম ব্যবহার করে জবাবদিহিতাহীন শাসন, দুর্নীতি ও দমননীতি চালিয়ে গেছে বলে দাবি করেন নাহিদ।
তার মতে, ২০২৪ সালের জনঅভ্যুত্থান এই ‘জমিদারি শাসনের’ অবসান ঘটিয়েছে। আর কোনো ব্যক্তি, পরিবার বা মতাদর্শ নাগরিকদের অধিকার কেড়ে নেয়ার সুযোগ পাবে না। ‘জাতির পিতা’ উপাধি ইতিহাস নয়, বরং একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হয়েছে—যা বৈষম্য ও রাষ্ট্রের একচেটিয়া দখলকে উৎসাহিত করেছে।
নাহিদ মুজিববাদকে একটি ‘ফ্যাসিস্ট মতাদর্শ’ আখ্যা দিয়ে বলেন, এটি গুম, হত্যা, ধর্ষণ, মানবাধিকার লঙ্ঘন, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠন, ইসলামোফোবিয়া, সাম্প্রদায়িকতা ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের মাধ্যমে দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তিনি আরও দাবি করেন, ষোল বছর ধরে রাজনৈতিকভাবে মুজিবকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল এবং তার মূর্তির আড়ালে অপহরণ, গণহত্যা ও লুটপাট চলেছে।
এনসিপি আহ্বায়ক মনে করেন, মুজিববাদ আজও দেশের জন্য হুমকি। এটি পরাজিত করতে রাজনৈতিক, আদর্শিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। তার মতে, লক্ষ্য হওয়া উচিত একটি সার্বভৌম ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়া, যেখানে কোনো দল, বংশ বা নেতা জনগণের ওপরে থাকবে না এবং দেশ কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত হবে না।