মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশ সৌদি আরব সাম্প্রতিক সময়ে পশ্চিমা ধাঁচের মিউজিক ফেস্টিভ্যাল ও রেভ পার্টি আয়োজনের পর এবার নিজেদের ঐতিহ্যের দিকেই বেশি জোর দিচ্ছে। পর্যটকদের আকর্ষণ এবং জাতীয় পরিচয় নতুনভাবে গড়ে তোলার অংশ হিসেবে রাজধানী রিয়াদে আয়োজন করা হয়েছে ঐতিহ্যনির্ভর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
রিয়াদের বিলাসবহুল মঞ্চনাটক ‘তেরহাল’-এ সাদা ঘোড়ায় আরোহী এক অভিনেতা সৌদি ঐতিহ্য ও পর্যটনস্থলগুলো উপস্থাপন করেন। আধুনিক লাইট শো এবং হাইটেক সরঞ্জামের সঙ্গে এতে মিশে গেছে ঐতিহ্যবাহী সৌদি গান, স্লোগান ও জাতীয় পোশাক। নাটকের মূল চরিত্র সাদ নিজের দেশ ভ্রমণের গল্প শোনান, যেখানে শতাধিক পারফর্মারের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি সৌদি শিল্পী, নৃত্যশিল্পী ও অ্যাক্রোব্যাট। সৌদি জেনারেল এন্টারটেইনমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান তুর্কি আল-আলশেখ জানিয়েছেন, চলতি বছরের রিয়াদ সিজন বিনোদন কর্মসূচিতে এবার উপসাগরীয় শিল্পীদের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক কিছু বিশৃঙ্খল সঙ্গীত উৎসবের পর এবার দেশটি তাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ভিত্তিতে আরও পরিশীলিত বিনোদনের দিকে এগোচ্ছে।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটি বর্তমানে জাতীয় পরিচয়কে নতুনভাবে উপস্থাপনের প্রয়াস নিচ্ছে—যেখানে ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিক শিল্প ও সংস্কৃতির সমন্বয় ঘটানো হচ্ছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আবদুররহমান আলমোতাওয়ার ভাষায়, “তেরহাল সৌদির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ঐতিহ্যের গভীরতা বৃহত্তর দর্শকের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে।”
২০১৮ সাল পর্যন্ত সৌদি আরবে কনসার্ট, নৃত্য নিষিদ্ধ ছিল এবং নারীদের জন্য মাথা ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক ছিল। তবে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে সংস্কার শুরু হওয়ার পর ফর্মুলা ওয়ান রেস, আন্তর্জাতিক শিল্পীদের কনসার্ট এবং নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব পরিবর্তনের লক্ষ্য কেবল অর্থনৈতিক বহুমুখীকরণ নয়, বরং ভিশন ২০৩০-এর অংশ হিসেবে সৌদি সমাজে নতুন সাংস্কৃতিক ধারা প্রতিষ্ঠা করা।