বিশ্বের কিছু মানুষ সত্যিই আমাদের ধারণার বাইরে চলে যায়। তানজানিয়ার একজন গ্রামের সাধারণ মানুষ ইসমাইল আজিজি (Ismail Azizi) তার জীবন দিয়ে এক গভীর রহস্য তৈরি করেছেন—যিনি মৃত্যুর মুখ থেকে ছয়বার ফিরে এসেছেন।
ইসমাইলের জীবনের প্রতিটি “মৃত্যু” একটি ধাক্কার মতো আশ্চর্যজনক:
ম্যালেরিয়ার কারণে মারা যাওয়ার পর, তিনি আগে থেকেই মৃত বলে ঘোষণা পান—কিন্তু পূর্ণবিশ্রুধির আগেই জীবনে ফিরে আসেন।
গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর আহত হওয়ার পরও সবাই তাকে মৃত ভাবছিল, কিন্তু তিনি আবার হাঁটুন।
সাপের বিষাক্ত কামড়ে, এজেন্ট ওষুধ দিচ্ছে—তবু তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
কোনো গর্তে পড়েন—বলতে গেলে এটা সরকারি বাথরুম অথবা টয়লেট পিটও হতে পারে; সেখানেও মৃতপ্রায় অবস্থায় শরীর পড়ে ছিল, কিন্তু বের করে উন্নত চিকিৎসায় ফিরে আসেন।
নিজের ঘরে পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা চালানো হয়, তাকে অপশক্তি ভেবে তাঁকে তাঁর বাড়িতে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেন প্রতিবেশীরা। আগুন ধরিয়ে দেন তাঁর ঘরে। ইসমাইলকে সে বারও মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল।
সর্বোপরি, একবার তিন দিন মর্গে পড়ে থাকার পর, কফিনে নামিয়ে দেয়ার ঠিক আগে তিনি আবার প্রাণ ফেরান—প্রকৃতপক্ষে ফিরে আসেন, জীবিত।
ইসমাইলের কথায়, ‘‘প্রতি বার যখনই আমি মারা যেতাম এবং ফিরে আসতাম, আমার শরীরে অদ্ভুত অনুভূতি হত। লোকেরা আমার সঙ্গে এমন আচরণ করতে শুরু করলেন যেন আমি এক জন পিশাচ।’’ তার দাবি, তিনি কখনও কারও ক্ষতি করেননি। তবুও স্থানীয়দের সন্দেহ যে তিনি অপশক্তি বা কালাজাদুর সঙ্গে যুক্ত। পরিবারও ত্যাগ করেছে তাঁকে।
এই ঘটনা সংক্রান্ত একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি “Afrimax English via Nairaland” প্রকাশ করেছে।
তানজ়ানীয় যুবক জানিয়েছেন, বর্তমানে গ্রামের একটি জীর্ণ বাড়িতে একা বসবাস করেন তিনি। সামান্য চাষাবাদ, রান্নাবান্না এবং ঘর পরিষ্কার করে সময় কাটে তাঁর।
যখন পরিবার দেখা পায়, তখন তারা ভয়ে পালিয়ে যায়—তারা মনে করে ইসমাইল হয়তো ভূত বা অশুভ শক্তির বাহক। এতে তার পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং গ্রামবাসীর সম্মান হারায়। অবশেষে, তিনি একাকিত্বে, একটি ফেটে যাওয়া বাড়িতে জীবন চালাচ্ছেন—ক্ষুদ্র ফসল ও রান্না ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থেকে জীবিকার প্রয়োজন জোগান করছেন।
ইসমাইলের চরম অসাধারণ জীবনকাল উৎসাহ বা বিভ্রম—যার বেশিরভাগ সময়ই বিভ্রান্তি ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতা দিয়ে পূর্ণ। তিনি যেমন একটি “ফিরে আসা” যাত্রার উদাহরণ, তেমনি তার জীবন সমাজের নির্ভরযোগ্যতার ক্ষয়, অন্ধ ধ্যান এবং গভীর মানবিক বিচারের বিচ্ছুরণের প্রতীক।
তথ্যচিত্র অনুযায়ী, ইসমাইলকে তাঁর গ্রামে অভিশপ্ত এবং অমর বলে মনে করা হয়। স্থানীয় সম্প্রদায় বা পরিবারের কাছ থেকে কোনও সমর্থন পান না তিনি। এত কিছুর পরেও ইসমাইল কিন্তু শান্ত। জবাবদিহি করতে করতে ক্লান্তও বটে।
ইসমাইল আজিজির রহস্যময় জীবন এখন সমগ্র গ্রামের জন্যে একটি ট্যাবু হয়ে উঠেছে। ছয়বার মৃত্যু ঘোষণা হওয়া—ম্যালেরিয়া, গাড়ি দুর্ঘটনা, সাপের কামড়, পিটে পড়া, আগুনে পোড়ানো—সত্ত্বেও জীবিত ফিরে আসার এই অদ্ভুত গল্প মানবতা ও জীবনের অপ্রত্যাশিত দিকগুলোকে নতুনভাবে ভাবিয়ে তোলে।