আজ শুক্রবার, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক অঙ্গনে এক নতুন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক হুমকির কারণে বাণিজ্যিক অস্থিরতার মধ্যেই ফের ভারতের পাশে দাঁড়াল ‘বন্ধু’ রাশিয়া। মস্কো ঘোষণা করেছে, ভারতের জন্য তারা তেল বিক্রিতে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ ছাড় দেবে। এটি শুধুমাত্র অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং দুটি দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের শক্তিশালী প্রতিফলন।
ভারত ও রাশিয়ার সম্পর্ক এক যুগেরও বেশি সময় ধরে স্থিতিশীল ও পারস্পরিকভাবে নির্ভরশীল। বিশেষ করে জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা খাতে এই সম্পর্ক দৃঢ়। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি মূল্যের ওঠানামা, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য চাপ, এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝে এই ধরনের অঙ্গীকার ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সমর্থন হিসেবে কাজ করে।
ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক নীতি ভারতীয় আমদানি ক্ষেত্রে একাধিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের তেলের শুল্ক বা অন্যান্য পণ্যের উপর হুমকি ভারতের ব্যবসায়ী ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার এই পদক্ষেপ ভারতের কাঁচামাল সরবরাহে স্থিতিশীলতা আনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতের অবস্থান শক্তিশালী করবে।
মস্কোর ঘোষিত ৫ শতাংশ ছাড় শুধুমাত্র প্রতীকী নয়। এটি ভারতীয় রিফাইনারি শিল্প ও জ্বালানি খাতে সরাসরি সাশ্রয় এনে দিতে পারে। এছাড়া, এই সিদ্ধান্তটি আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানকে আরও দৃঢ় করবে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও অন্যান্য তেল সরবরাহকারী দেশগুলোর সঙ্গে তুলনায়।
অর্থনৈতিক অঙ্গীকারের বাইরে, এটি একটি শক্তিশালী কূটনৈতিক বার্তা বহন করে। কঠিন সময়ে রাশিয়া ভারতের পাশে দাঁড়াচ্ছে—যা দুটি দেশের মধ্যকার বিশ্বাস এবং দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারিত্বকে পুনরায় প্রমাণ করে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ভারত ও রাশিয়ার সম্পর্ককে আরও গভীর করবে এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ভারসাম্য রক্ষায় সাহায্য করবে।
বিশ্লেষকরা আশা করছেন, এই ছাড়ের পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে আরও কয়েকটি শিল্প ও বাণিজ্যিক চুক্তি এগোতে পারে। ভারতের জন্য এটি এক ধরনের অর্থনৈতিক ‘বালিশ’, যা আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যেও দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।
উপসংহার:
ট্রাম্পের শুল্ক হুমকির সময় রাশিয়ার এই বিশেষ অঙ্গীকার শুধু অর্থনৈতিক নয়, কূটনৈতিক গুরুত্বেও সমানভাবে প্রভাব ফেলে। কঠিন পরিস্থিতিতেও বন্ধু হিসেবে রাশিয়ার এই সহায়তা ভারতের জন্য এক ধরনের নিরাপত্তার প্রতীক।