চট্টগ্রামের ইপিজেডে শাশুড়ির ভাড়াটে খুনিদের হাতে অন্তঃস্বত্বা পুত্রবধূ খুনের রহস্য উদঘাটনসহ ঘটনায় জড়িত মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো। গ্রেপ্তারকৃত আসামির নাম মো. আরিফ (৩৫)। মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, রোববার (২৪ আগস্ট) চট্টগ্রামের বায়জিদ থানাধীন হাজীপাড়া বেলতল এলাকা থেকে আরিফকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পিবিআই জানিয়েছে, ভিকটিম মাহাবুবা আক্তারের আপন খালাত ভাইয়ের সঙ্গে ঘটনার ৩ বছর পূর্বে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে ভিকটিমকে তার স্বামী এবং শাশুড়ি মিলে অত্যাচার ও নির্যাতন করতেন। ২০২১ সালের ১৬ জুলাই বিকাল ৪টার দিকে ভিকটিমের খালাত বোন শান্তা ভিকটিমের ছোট বোন সাদিয়া আক্তারকে মোবাইল ফোনে জানান যে, অজ্ঞাতনামা আসামিরা ভিকটিমের স্বামীর বাসায় ঢুকে ভিকটিমকে গলা টিপে বেহুঁশ করে গেছে। সংবাদ পেয়ে ভিকটিমের ছোট বোন ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিমকে মৃত অবস্থায় শয়ন কক্ষের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। এই ঘটনায় ভিকটিমের বড় ভাই মো. মিসকাত বাদী হয়ে ভিকটিমের স্বামী, শাশুড়ি ও বাসার ভাড়াটিয়া মো. আরিফকে এজাহারনামীয় আসামি করে ইপিজেড থানায় মামলা করেন। থানা পুলিশ ১ বছর ৩ মাস মামলাটি তদন্ত করে চার্জশিট দাখিল করে। পরে বাদির আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পরে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর আভিযানিক টিম তথ্য-প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৪ আগস্ট বায়জিদ থানাধীন হাজীপাড়া বেলতলা এলাকা থেকে মো. আরিফকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরিফ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকার করেন। পরদিন তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনায় জানা যায় যে,আরিফ ভিকটিমের শাশুড়ি এবং স্বামীর পূর্ব পরিচিত এবং তাদের বাসার ভাড়াটিয়া। ভিকটিমের শাশুড়ি নাজনিন বেগম পারিবারিক কলেহের জেরে দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে ভিকটিমকে হত্যা করার জন্য আরিফের সঙ্গে মৌখিক চুক্তি এবং পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা মোতাবেক আরিফ তার পূর্ব পরিচিত ৩ ব্যক্তিকে ভাড়া করে ঘটনার দিন জুমার নামাজের সময় ভিকটিমের স্বামীর বাসায় ঢুকে এবং ভিকটিমকে নামাজরত অবস্থায় গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে যান। পলাতক অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।