শিরোনামঃ
জনতার মঞ্চ নিয়ে ‘বাতিল’ মামলা ফের চালু হচ্ছে: দেড় শতাধিক সাবেক আমলাকে খুঁজছেন গোয়েন্দারা এশিয়ায় ঘুরছে জেনজির শনি: রিন্টু আনোয়ার কিংবদন্তি শিল্পী ফরিদা পারভীনের দাফন কুষ্টিয়ায় গাজায় নিহত আরও ৪৯, গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে জাতিসংঘ আশ্রয়কেন্দ্র ভবন থেকে পড়ে চীনা অভিনেতার মৃত্যু সেই প্রাইভেট কারের ধাক্কায় আহত চার নারীর একজনের মৃত্যু গাজায় বোমা বর্ষন বাড়িয়েছে ইসরায়েল, প্রাণ নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ফিলিস্তিনিরা সাবেক সার্জেন্ট মেজরের স্বীকারোক্তি: তার যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে এক নারী সেনা আত্মহত্যা করেছিলেন চার্লি কার্কের স্ত্রীর আবেগঘন বার্তা: ‘আমি তোমার আদর্শকে কখনো মরতে দেব না’ আবু ধাবির নতুন ওয়েভ পুলে বিলাসিতার দৌড় : প্রত্যেক ঢেউতে $১৫০
রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০৭ অপরাহ্ন

কে খেলছে কার খেলা!

-সাঈদ তারেক / ৫৫ বার
প্রকাশ: রবিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৫
ছবি: দৈনিক ইনকিলাব সৌজন্যে

আমার মাঝেমাঝে সন্দেহ হয় রাজনীতির নাটাই কি এখনও শেখ হাসিনার হাতেই! সাড়ে পনের বছর একহাতে সরকার চালিয়েছে। সরকারের কোনাখামচায় কোথায় কি হয়, কে কি করে কইকই যায়, নেতা-নেত্রীদের বাড়ীর খবর হাড়ির খবর সব তার জানা। কার কত রেট কাকে কিভাবে কাজে লাগাতে হয় ব্যবহার করতে হয় ম্যানেজ করতে হয় সব ট্যাক্টিক্স নখদর্পনে। প্রশাসনে সর্বত্র নিজের লোক। ফলে এখানে কখন কোথায় কি হচ্ছে জেনে যাওয়া তার জন্য মূহুর্তের ব্যপার!

কয়েকদিন আগে ভারতীয় এক গনমাধ্যমে দিল্লীতে শেখ হাসিনা-এস আলমের একটা মিটিং এবং মিটিংয়ে কি আলোচনা বা পরিকল্পনা হয়েছে তা নিয়ে প্রতিবেদন প্রচারিত হয়েছে। ধরে নেয়া যায় মিটিংটা ছিল গোপনীয়, তারপরও তাতে বলা হয়েছে সন্ত্রাস সহিংসতার মাধ্যমে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে এস আলম নাকি সাড়ে সাড়ে চার হাজার কোটী টাকা দিয়েছে। প্রথমে সন্দেহ হয়েছিল মতলব ছাড়া তো ওখানকার মিডিয়া বাংলাদেশ নিয়ে কোন নিউজ করে না। গত কয়েকদিন ঢাকায় লাগাতার মব সন্ত্রাসের ঘটনায় মনে হচ্ছে ঘটনা কিছু একটা ঘটেছে!

পরিস্থিতি উত্তপ্ত এবং ঘোলাটে হয়ে উঠছে। কাল নুর মার খেলো। এ সবের প্রেক্ষিতে ফেব্রুয়ারির নির্দ্ধারিত নির্বাচনই অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। মাসছয়েক আগেও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশে একটা অবাধ অংশগ্রহনমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে গনতান্ত্রিক সরকার দেখতে চেয়েছিল। ব্যাংককে ইউনুস-মোদী বৈঠকের পর থেকে একেবারে চুপ। প্রশ্ন জাগতে পারে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনের বাইরে রাখায় তারা কি এ ব্যপারে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছে! ভিন্ন পরিকল্পনায় এগুচ্ছে!
কি হতে পারে তা!

একটা নির্বাচিত সরকার বসে গেলে তাকে হঠানো সময়ের ব্যপার। তার ওপর ধারনা করা গেছিলো বিএনপি এলে হয়তো আওয়ামী লীগ কিছু স্পেস পাবে। কিন্তু ১৬ বছরের প্রতিশোধ চৌদ্দ আনা না মিটিয়ে তারা যে কোন ছাড় দেবে না তা যখন বোঝা গেল, সে অবস্থায় অপশন তো একটাই- নির্বাচনই ভন্ডুল করে দেওয়া। যাতে সহসাই দেশে কোন নির্বাচিত সরকার বসতে না পারে। আর এই নির্বাচন ঠেকাতে মোক্ষম কৌশল, মব সন্ত্রাস। সারা দেশে প্রতিটি সেক্টরে ক্রমাগত মব সন্ত্রাসের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলা গেলে নির্বাচন করায় কার বাপের সাধ্য! নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃস্টি করে ইউনুস সরকারকে ব্যর্থ প্রমান করা। মানুষকে তার বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলা। এর ধারাবাহিকতায় জেনারেল ওয়াকারের নেতৃত্বে আর্মির ক্ষমতা গ্রহন বা সে রাজী না হলে ’৭৫এর ৩রা নভেম্বরের মত আওয়ামীপন্থী একটা মিলিটারি ক্যু করানো!
এমন কৌশল নিয়ে যদি শেখ হাসিনা এগোন তার জন্য দরকার অনেক টাকা। এস আলমের কাছে চাইলে টাকা সে দেবে। বাংলাদেশের টোকাই রাজনীতিক বা মব সন্ত্রাসীদের জন্য সাড়ে চার হাজার কোটী অনেক টাকা! এই টাকা কোথায় কার মাধ্যমে কিভাবে পৌঁছানো যাবে সে নেটওয়ার্ক তাদের এখনও অটুট আছে। আমার ধারনা এই টাকার কিছু অংশ ইতিমধ্যেই দেশে ঢুকে গেছে। পরিকল্পনামাফিক কাজও শুরু হয়ে গেছে।
সেদিন একজনের একটা পোস্টে দেখলাম, ঢাকায় মব সন্ত্রাসের জন্য নাকি বেশ কয়েকটা গ্রুপ আছে। এরা ভাড়ায় খাটে। ২০/৩০ জনের একটা দল বানিয়ে যেভাবে বলে দেওয়া হয় সেভাবে কাজ করে আসে। এমন একটা গ্রপের রেট নাকি পার ইভেন্ট দশ লাখ টাকা!

কয়েকটা প্রভাবশালী দল ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন চায় না। মুখে সনদ সংষ্কার পিআর গনভোট যাই বলুক আসলে এদের কারও গোছগাছ বা গোটা প্রশাসন নিজেদের কন্ট্রোলে নিয়ে নেওয়ার জন্য আরও সময় দরকার, কেউ ক্ষমতা থেকে এত তাড়াতাড়ি যেতে চাইছে না। এরা নানা অজুহাত তুলে নির্বাচন বন্ধের দাবী করছে। ক্ষেত্র প্রস্তুত করছে। এক নেতা তো বুক ফুলিয়ে ঘোষনাই করে দিয়েছে- ফেব্রুয়ারিতে কোন নির্বাচন হবে না। এখন অংশগ্রহনের সুযোগ না পাওয়ায় বা ভিন্ন লক্ষ্যে শেখ হাসিনাও যদি নির্বাচন ভন্ডুলের কাতারে শামিল হয়, ব্যপারটা কি দাঁড়ালো! তিন পক্ষের অভিন্ন লক্ষ্য!

এমনিতেই প্রফেসর ইউনুস দেশে মবতন্ত্র প্রশ্রয় দিয়ে চলেছেন। উনি কি চান আল্লাহ মালুম! এর সাথে যদি শেখ হাসিনার সাড়ে চার হাজার কোটী ইনজেক্ট হয়, অবস্থাটা কি দাঁড়াবে! আফটার অল টাকার দরকার কার না!

লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক।


এ জাতীয় আরো খবর...