রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ রুটে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর যানবাহন ও যাত্রীর চাপ কিছুটা কমলেও এখনো প্রতিদিন গড়ে তিন হাজারের বেশি গাড়ি এই নৌ পথ ব্যবহার করে চলাচল করছে। রাজধানীর কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল, মিরপুর, উত্তরা, গাজীপুরের চন্দ্রা, টঙ্গী, সাভার, আশুলিয়া, জিরাবো ও হেমায়েতপুর শিল্প এলাকার হাজারো কর্মজীবী মানুষ এই রুটেই যাতায়াত করেন।
স্বাভাবিক সময়ে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুট পারাপারে চাপ তেমন না থাকলেও, ছুটির দিনগুলোতে যাত্রী ও যানবাহনের ভিড় কয়েকগুণ বেড়ে যায়। ১৫টি ফেরি চলাচল করায় যাত্রী ও যানবাহনের ভিড় সামাল দিতে বেগ পেতে হচ্ছিল না কর্তৃপক্ষকে। তবে, সম্প্রতি ঘাট এলাকায় ভাঙন ও নদীর নাব্য সংকটের কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে পদ্মার ভাঙনে পাটুরিয়া ঘাট বারবার হুমকির মুখে পড়ছে। ঘাটের পন্টুনগুলো বারবার সরাতে হচ্ছে। মেরামত ও সংস্কারকাজ চলাকালে লোড-আনলোড বন্ধ থাকায় ফেরি পেতে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের যানবাহনকে। ফলে ঘাট এলাকায় ভোগান্তি বাড়ছে।
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে নাব্য সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত ২১ আগস্ট থেকে নাব্য কমে যাওয়ায় দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ঘাট পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে। বর্তমানে বিকল্প দুইটি ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। ঘাট কমে যাওয়ায় সেখানে ফেরি লোড-আনলোডে সময় বেশি লাগছে। পদ্মায় তীব্র স্রোতের কারণে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ফেরি পার হতে ১০ থেকে ২০ মিনিট বেশি সময় লাগছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মুহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, “নাব্য সংকটের কারণে ৭ নম্বর ঘাট বন্ধ রয়েছে। এখন দুইটি ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। স্রোতের কারণে ফেরি পার হতে সময় কিছুটা বেশি লাগলেও ঘাট এলাকায় বড় ধরনের ভোগান্তি নেই।”
মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটের দায়িত্বে থাকা বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের এজিএম (বাণিজ্য) সালাম হোসেন বলেন, “গত মাসে ভাঙনের কারণে একাধিকবার পন্টুন সরাতে হয়েছে। তখন একেক সময় একেক ঘাট বন্ধ ছিল। তবে বর্তমানে তিনটি ঘাট সচল রয়েছে। ভাঙনের ঝুঁকি থাকলেও ঘাট সচল রাখতে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। যথেষ্ট সংখ্যক ফেরি চলাচল করায় বড় কোনো ভোগান্তি নেই।”