শিরোনামঃ
আবু ধাবির নতুন ওয়েভ পুলে বিলাসিতার দৌড় : প্রত্যেক ঢেউতে $১৫০ পাল্টা শুল্ক নিয়ে আলোচনা: আজ ঢাকায় আসছে মার্কিন প্রতিনিধিদল এক নজরে “লালনকন্যা” ফরিদা পারভীনের বর্ণাঢ্য জীবন ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে সংস্কৃতি উপদেষ্টার শোক বরেণ্য লোকসংগীত শিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় রাজনীতি অবসানের অঙ্গীকার নবনির্বাচিত জাকসু ভিপির সিনেমা দেখে প্রভাবিত হয়ে বাবাকে হত্যা, ছেলে গ্রেফতার ভিপি নুরের ওপর হামলা: সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাশেদ খান গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা বিএনপির লক্ষ্য: সালাহউদ্দিন আহমদ সাম্প্রদায়িক উত্থানের কারণে মবের ঘটনা বাড়ছে: গয়েশ্বর চন্দ্র
রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:১৮ পূর্বাহ্ন

গরুর মাংস রফতানিতে ভারতের রেকর্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৫৬ বার
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ক্ষমতার বাইরে থাকাকালীন নরেন্দ্র মোদি ভারতের ক্রমবর্ধমান গরুর মাংস রফতানির জন্য কংগ্রেস দলের সমালোচনায় সরব ছিলেন।  তিনি কংগ্রেস সরকারের সময় গরুর মাংস রফতানিকে ‘পিঙ্ক রেভল্যুশন’ বলে ব্যঙ্গ করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, ভারতের মুসলিম সংখ্যাগোষ্ঠীকে খুশি করতে কংগ্রেস সরকার এই খাতকে উৎসাহ দিয়েছে।

কিন্তু বাস্তবে মোদির শাসনামলেও গরু ও মহিষের মাংস রফতানি বেড়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ। এই খাতে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রা আয় এখন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

মুসলিম মিরর নামে ভারতীয় একটি অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে ভারত প্রতি বছর প্রায় ১৫ লাখ ৩০ হাজার টন গরু-মহিষের মাংস রফতানি করে। এ থেকে আয় হয় প্রায় ৪৩০ কোটি মার্কিন ডলার। বৈশ্বিক মাংস বাজারে ভারতের অবস্থানও দৃঢ় হচ্ছে। বিশ্বের বৃহত্তম মাংস রফতানিকারক ব্রাজিলের পরে ভারতের অবস্থান রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে।

গরুর মাংস রফতানিতে ভারতের পরে অবস্থান করছে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করে যে, মাংস রফতানি এখন ভারতের জন্য এক বড় অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি।

ভারতে রাজ্য পর্যায়ে গরু জবাইয়ের জন্য বিভিন্ন বিধিনিষেধ থাকলেও, দেশটিতে অভ্যন্তরীণভাবে কোনো একক জাতীয় আইন নেই। ব্যবসায়ীরা তুলনামূলকভাবে শিথিল বিধি থাকা রাজ্য থেকে গরু পাচার করে রফতানি চালাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের চেয়ে আর্থিক বাস্তবতাই এই খাতের প্রসারে বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখছে। ভারতে মহিষের সংখ্যা প্রায় ১১ কোটি ৫০ লাখ এবং গরুর সংখ্যা ৭ কোটি ৬০ লাখের বেশি। দুধ উৎপাদনের পর গরু-মহিষের মাংস ও চামড়া শিল্পে ব্যবহার করা হয়, যা বৈদেশিক রফতানির পাশাপাশি দেশীয় অর্থনীতিকেও সমৃদ্ধ করছে।

ভারতের মাংস রফতানি ৬৫টি দেশে পৌঁছেছে। বিশেষ করে উপসাগরীয় তেলসমৃদ্ধ দেশগুলোতে ভারতীয় মাংসের চাহিদা বেশি। কারণ, এ মাংস আসে মুক্ত চারণভূমিতে লালিত গরু-মহিষ থেকে, যা তুলনামূলক স্বাস্থ্যসম্মত বলে বিবেচিত হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতের মাংসের দাম অনেক সময় ব্রাজিল বা অস্ট্রেলিয়ার তুলনায় কম হওয়ায় এটি ক্রেতাদের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।

অর্থনৈতিক লাভের কারণে হিন্দু উদ্যোক্তারাও ব্যাপকভাবে এই খাতে প্রবেশ করেছেন। ভারতের শীর্ষ ছয় মাংস রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চারটির মালিক হিন্দু। এর মধ্যে রয়েছে আল-কাবির এক্সপোর্টস, অ্যারাবিয়ান এক্সপোর্টস, এম.কে.আর ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টস এবং পি.এম.এল ইন্ডাস্ট্রিজ। এ তথ্য প্রমাণ করে যে, ধর্মীয় ভেদাভেদ থাকলেও ব্যবসায়িক সুযোগের কারণে হিন্দুরাও সক্রিয়ভাবে এই শিল্পে যুক্ত হচ্ছেন।

আরেকটি দিক হলো, ভারতের রফতানি করা সব মাংসে হালাল সনদ থাকলেও, দেশীয় বাজারে হালাল সার্টিফিকেশন নিষিদ্ধ। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাজারে মুসলিম সংখ্যাগোষ্ঠীকে লক্ষ্য রেখে হালাল মান বজায় রাখা হলেও দেশীয়ভাবে ভিন্ন নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে।

সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে, মোদি ক্ষমতায় আসার আগে যে শিল্পকে তিনি সমালোচনা করেছিলেন, সেই গরু-মহিষের মাংস রপ্তানি এখন রেকর্ড আয়ের খাত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।


এ জাতীয় আরো খবর...