শিরোনামঃ
ঢালিউড অ্যাওয়ার্ডের সিলভার জুবিলি উদযাপন হবে ঢাকায় প্রার্থী ক্যারিকেচার: কোনদিকে নির্বাচন এস আলমসহ ৬৭ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা: ইসলামী ব্যাংক থেকে ১০ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ ঢাকা ও আইডিয়াল কলেজের মধ্যে ‘শান্তিচুক্তি’, যোগ দেয়নি সিটি কলেজ পাকিস্তান-ইরানের যৌথ প্রযোজনায় আসছে আল্লামা ইকবালের জীবনী ‘ফুটবলারদের ব্যবহার খুব খারাপ, তারা মারপিট করে’ যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ফের লেবাননে ইসরাইলি হামলা, নিহত ২ রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন আকুর দায় শোধের পরও ১৩৪ ঘণ্টার অনশন ভেঙে সালাউদ্দিনের অনুরোধে হাসপাতালে তারেক উত্তেজনা ১৩ নভেম্বর ঘিরে, কী বলছে গোয়েন্দা-পুলিশ-র‌্যাব
মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৪০ পূর্বাহ্ন

নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা, পাল্টে যেতে পারে রাজনীতির হিসাব

বিশেষ প্রতিনিধি / ৭০ বার
প্রকাশ: রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘোষণা এলেও নির্বাচন পদ্ধতির জটিলতা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্ন ভিন্ন অবস্থানকে কেন্দ্র করে এক ধরনের ধোঁয়াশা ও ষড়যন্ত্রের আবহ তৈরি হয়েছে। একদিকে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা করে ৩০০ আসনের সীমানা নির্ধারণ ও ভোটার তালিকা তৈরির কাজ সম্পন্ন করেছে, অন্যদিকে নির্বাচনটি কি প্রচলিত সাংবিধানিক পদ্ধতিতে হবে নাকি আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে ব্যাপক আলোচনা ও বিভেদ।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করলেও কোনো কোনো মহল থেকে নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এই পরিস্থিতিতে দেশের প্রায় ১২ কোটি ভোটার নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে দ্বিধায় রয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সরকারের উচিত দ্রুত নির্বাচন পদ্ধতি পরিষ্কার করা, যাতে জনমনে থাকা বিভ্রান্তি দূর হয় এবং নির্বাচন পেছানোর যেকোনো কৌশল নষ্ট করা যায়।

দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ এবং সংবিধান বিশেষজ্ঞরা সংবিধান অনুযায়ী প্রচলিত পদ্ধতিতেই নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। বিএনপি সহ প্রায় অর্ধশতাধিক দল এই পদ্ধতির পক্ষে থাকলেও জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের জন্য জোরালো দাবি জানাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, এই দলগুলো পিআর পদ্ধতির দাবি তুলে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে, যার পেছনে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের একটি নীল নকশা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট দ্রুত পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে এবং ডিসেম্বরের আগেই রাজনীতির হিসাব-নিকাশ পাল্টে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বর্তমানে যারা পিআর পদ্ধতির দাবিতে জোটবদ্ধ, তাদের মধ্যেও ভাঙনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে এবং অনেকেই বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হতে আগ্রহ প্রকাশ করতে পারে। জামায়াত এক বছর ধরে ডানপন্থি ও ইসলামি দলগুলোকে নিয়ে জোট গঠনের চেষ্টা করলেও সম্প্রতি আলোচনায় আসা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জামায়াতের নেতৃত্বাধীন আন্দোলনে যোগ দেয়নি, যা নতুন রাজনৈতিক মেরুকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

এদিকে, দেশের বৃহত্তম দল বিএনপি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে আশাবাদী। যদিও দলের নেতারা নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্রের বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, তারা মনে করেন জনগণের প্রতিরোধের মুখে সব চক্রান্ত ব্যর্থ হবে। বিএনপি এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা বললেও নতুন নির্বাচনী জোট গঠনের সম্ভাবনাও খোলা রেখেছে, যেখানে ডানপন্থি দলের পাশাপাশি বাম ও ইসলামি দলগুলোও থাকতে পারে।

এই রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মাজার ও দরগায় হামলা এবং ভাঙচুরের মতো ঘটনা ঘটছে, যা ২০০৭ সালের মতো পরিস্থিতি তৈরির একটি পরিকল্পিত প্রচেষ্টা বলে অনেকে মনে করছেন। এই ধরনের সহিংসতার মাধ্যমে নির্বাচন পেছানোর অজুহাত তৈরি করার চেষ্টা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সামগ্রিকভাবে, নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জোট গঠন, কৌশল নির্ধারণ এবং নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ততই বাড়ছে। তবে নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে সৃষ্ট ধোঁয়াশা এবং সম্ভাব্য ষড়যন্ত্রের কারণে ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে ঘিরে একটি সংশয় ও উৎকণ্ঠার পরিবেশও বিরাজ করছে।

 


এ জাতীয় আরো খবর...