শিরোনামঃ
ঢালিউড অ্যাওয়ার্ডের সিলভার জুবিলি উদযাপন হবে ঢাকায় প্রার্থী ক্যারিকেচার: কোনদিকে নির্বাচন এস আলমসহ ৬৭ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা: ইসলামী ব্যাংক থেকে ১০ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ ঢাকা ও আইডিয়াল কলেজের মধ্যে ‘শান্তিচুক্তি’, যোগ দেয়নি সিটি কলেজ পাকিস্তান-ইরানের যৌথ প্রযোজনায় আসছে আল্লামা ইকবালের জীবনী ‘ফুটবলারদের ব্যবহার খুব খারাপ, তারা মারপিট করে’ যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ফের লেবাননে ইসরাইলি হামলা, নিহত ২ রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন আকুর দায় শোধের পরও ১৩৪ ঘণ্টার অনশন ভেঙে সালাউদ্দিনের অনুরোধে হাসপাতালে তারেক উত্তেজনা ১৩ নভেম্বর ঘিরে, কী বলছে গোয়েন্দা-পুলিশ-র‌্যাব
মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৯ পূর্বাহ্ন

জাবিতে বিক্ষোভ নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মসূচির প্রতিবাদে

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৩৫ বার
প্রকাশ: বুধবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫

নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে একটি মিছিলের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের জাবি শাখা সভাপতি আখতারুজ্জামান সোহেলের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ‘হটাও ইউনূস বাঁচাও দেশ’ ব্যানারে ৪ জনের একটি মিছিল পোস্ট করলে বিষয়টি সামনে আসে। মিছিলে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সরাসরি হামলায় জড়িত এনামুল ও সোহেল রানাকে চিহ্নিত করা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলো ও কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ছাত্রলীগের মিছিলের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

এ সময় রাত নয়টায় বিক্ষোভ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল, বিক্ষোভ মিছিল টি এমএইচ গেইট থেকে ডেইরি গেইট হয়ে ঢাকা আরিচা মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে ক্যাম্পাসের বটতলা হয়ে রবীন্দ্র চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। একই সময় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে জাতীয় ছাত্রশক্তি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।

এ দিকে রাত দশটায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু)। বিক্ষোভে তারা প্রশাসনের উদাসীনতার সুযোগে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ফটকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিলের প্রতিবাদ ও জুলাইয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর হামলায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতা ও শিক্ষক-কর্মকর্তাদের রাষ্ট্রীয় আইনে বিচার দাবি করে।

এসময় শিক্ষার্থীদের ‘ছাত্রলীগের চামড়া তুলে দেবো আমরা’, ‘আলিফ-শ্রাবন যেই গেটে, ছাত্রলীগ কেনো সেই গেটে’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই, ছাত্রলীগের বিচার চাই’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেনো বাহিরে’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

মিছিল শেষে জাকসুর সাধারন সম্পাদক (জিএস) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরে আওয়ামীলীগ তার রক্তপিপাসু রূপ দেখানোর মাধ্যমে তাদের ফ্যাসিবাদের যাত্রা শুরু করেছিল। তারপর নয় সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ড, তেরো এর গণহত্যা, এবং ২৪ এর গণহত্যার মাধ্যমে সেই ফ্যাসিবাদী রক্তপিপাসার সিলসিলা বজায় রেখেছিল। আমরা আজ দেখেছি ছাত্রলীগ নামের কিছু কুলাঙ্গার নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ব্যানারে সামনে এসেছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই—সন্ত্রাসীদেরকে আমাদের চব্বিশের শহীদেরা রক্ত দিয়ে নিষিদ্ধ করেছে, তারা আজীবন নিষিদ্ধই থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলতে চাই আপনাদের গাফিলতির কারণেই ছাত্রলীগ আজ নাশকতা পরিকল্পনা করার সুযোগ পাচ্ছে। আপনারা অতি দ্রুত ছাত্রলীগের শেল্টারদাতাদের চিহ্নিত করুন, অপরাধীদের বিচার করুন। অন্যথায় ছাত্রলীগ পুনর্বাসনের দায় আপনাদেরকে নিতে হবে।

শাখা শিবিরের সেক্রেটারি মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, আজকের এই ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লগি-বৈঠা তাণ্ডবের মাধ্যমে ২০০৬ সালে ফ্যাসিবাদের সূচনা করেছিল। ঠিক এই দিনেই আবার সেই নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে মানববন্ধন করার দুঃসাহস দেখাচ্ছে। এটা আমাদের এবং একইসাথে প্রশাসনের জন্য লজ্জার। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ, ছাত্রলীগ কেয়ামত পর্যন্ত নিষিদ্ধ থাকবে। এ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের আর ফেরার কোনো সুযোগ নেই।

জাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, ‘জাকসুর আগেও আমরা জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিচার নিয়ে সোচ্চার ছিলাম, জাকসুতে নির্বাচিত হওয়ার পরেও আমরা বিচারের দাবি থেকে এক চুলও সরে আসিনি। জুলাই হামলার বিচারের জন্য গঠিত তদন্ত কমিটিতে যে সকল শিক্ষক রয়েছেন, তারা যদি জুলাই হামলায় জড়িত শিক্ষকদের বিচার এবং নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে মামলা না করেন, তাহলে আমরা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে একশনে যাওয়ার আগে আপনাদের বিরুদ্ধে একশনে যাব।’

এসময় তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘যদি আর কখনো নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মীকে ক্যাম্পাসের ত্রিসীমানায় কোনো ধরণের কর্মসূচি দেওয়ার দুঃসাহস দেখান, তাহলে আপনারা এখান থেকে জীবিত হয়ে মায়ের কোলে ফিরে যেতে পারবেন না। এখনো আমাদের অনেক মায়ের সন্তান বিভিন্ন হাসপাতালের মর্গে আছেন, অনেক জুলাই যোদ্ধা এখনো হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে, আর আপনারা এখানে মানববন্ধন করার দুঃসাহস দেখান, আপনাদের দুঃসাহসকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করবো আমরা।’


এ জাতীয় আরো খবর...