রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) এক ফোনালাপে ইরানে ইসরায়েলের হামলার কড়া সমালোচনা করেছেন এবং দ্রুত সংঘাত প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছেন। ক্রেমলিন জানিয়েছে, দুই নেতা একমত হয়েছেন যে এই সংকটের কোনো সামরিক সমাধান নেই।
ক্রেমলিনের উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুতিন ও শি উভয়ে ইসরায়েলের কার্যক্রমের কড়া নিন্দা জানিয়েছেন।
এসব কর্মকাণ্ড জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের অন্যান্য বিধানের লঙ্ঘন।
তিনি আরো বলেন, ‘মস্কো ও বেইজিংয়ের বিশ্বাস, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিসংক্রান্ত বর্তমান পরিস্থিতির সমাধান শুধু রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উপায়ে সম্ভব।’
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার বরাতে জানানো হয়, শি চিনপিং যুক্তরাষ্ট্রের নাম না নিয়েই বলেন, ‘যেসব বড় দেশ এই অঞ্চলে প্রভাব রাখে, তাদের কূটনৈতিক উদ্যোগ বাড়াতে হবে যাতে পরিস্থিতি শান্ত হয়।’
শি চিনপিং আরো বলেন, ‘লড়াইরত পক্ষগুলো, বিশেষ করে ইসরায়েল, দ্রুত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করুক।
তা না হলে সংঘাতের মাত্রা বাড়বে এবং এর প্রভাব ছড়িয়ে পড়বে।’ তিনি সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান এবং ইসরায়েল ও ইরানকে অন্যান্য দেশের নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিতে বলেন।
রাশিয়া আগেই সতর্ক করেছে, যদি ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ আরো তীব্র হয়, তাহলে তা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। মস্কো যুক্তরাষ্ট্রকেও আহ্বান জানিয়েছে, যেন তারা ইসরায়েলের হামলায় অংশ না নেয়।
গত কয়েক দিনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে কথা বলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। তিনি বারবার জানিয়েছেন, রাশিয়া সংঘাত নিরসনে মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত। তবে এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ রাশিয়ার এই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি।
পুতিন বৃহস্পতিবার শি চিনপিংয়ের সঙ্গে ফোনালাপে আবারো মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেন। ইউরি উশাকভ জানান, শি চিনপিং এই প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছেন, কারণ তিনি মনে করেন এটি বর্তমান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি প্রশমনে সহায়ক হতে পারে।
দুই নেতা পরবর্তী দিনগুলোতে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ রাখার বিষয়ে একমত হন।
উল্লেখ্য, মধ্যপ্রাচ্যে কৌশলগত ও অর্থনৈতিক প্রভাব বাড়াতে চীন দীর্ঘদিন ধরেই ইরানকে সমর্থন দিয়ে আসছে।