দেশজুড়ে ‘মব ভায়োলেন্স’ বা উচ্ছৃঙ্খল জনতার সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, জনদুর্ভোগ ও জানমালের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকা যেকোনো কর্মকাণ্ড দমনে ভবিষ্যতেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেস-এ মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে মব ভায়োলেন্স মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে। যার ফলে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সরকারের পক্ষ থেকে এখনো সেনাবাহিনীকে নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা দেয়া হয়নি। নির্দেশনা পেলে সেই অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করা হবে।
ব্রিফিংয়ে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন কর্নেল শফিকুল ইসলাম। ভারত থেকে বাংলাদেশে ‘পুশ ইন’ ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, বিজিবি ও কোস্টগার্ড বিষয়টি সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সীমান্তে টহল ও গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। এখনো সেনাবাহিনী সম্পৃক্ত হওয়ার প্রয়োজন দেখা দেয়নি।
আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপের একটি প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর আক্রমণাত্মক ভূমিকায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হলে সেনা সদর জানায়, এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তাদের হাতে নেই।
গত তিন সপ্তাহে ৫৬টি অবৈধ অস্ত্র ও ৯৯০ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানায় সেনাবাহিনী। গত আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ৬৬৭টি অবৈধ অস্ত্র ও ২ লাখ ৮৬ হাজার ৭৫৪ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ১৫ হাজার ২৬২ জন অপরাধী গ্রেপ্তার হয়েছে, যাদের মধ্যে কিশোর গ্যাং সদস্য, তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও ডাকাত রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনসহ একাধিক শীর্ষ সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে গোপনীয়তা বজায় রাখা হয় এবং এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
মাদকবিরোধী অভিযানের বিষয়ে তিনি জানান, গত তিন সপ্তাহে ৪৫২ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছে ৫ হাজার ৪৭৬ জন মাদক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে মহাসড়ক ও গণপরিবহন ব্যবস্থাপনায় সেনাবাহিনীর বিশেষ তৎপরতার কথাও জানানো হয়। যানজট ও অতিরিক্ত ভাড়া রোধে চেকপোস্ট বসানো এবং টিকিট কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে ১ হাজার ২৫৫টি যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয় এবং যাত্রীদের ৩৫ লাখ ২৬ হাজার ২৩৩ টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে।