ইরান ও ইসরাইল যুদ্ধকে ‘১২ দিনের যুদ্ধ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রতিটি যুদ্ধেরই সাধারণত একটি নাম দেওয়া হয়। এই যুদ্ধের নামটি দিলেন স্বয়ং ট্রাম্প। তিনিই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেন। এর মাধ্যমে মূলত যুদ্ধ থামানোর ‘ক্রেডিট’ বা কৃতিত্ব নিলেন তিনি।
ইসরাইলের ‘লাভ’ বলতে তাদের লক্ষ্য ‘সামান্য’ অর্জিত হয়েছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের লাভ হলো— ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। যদিও তেহরানের দাবি, ওই হামলায় তাদের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি।
এদিকে ইরানের ‘লাভ’ কী হলো তা নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন অনেক বিশ্লেষক। যুদ্ধে নিজেদের ‘অপরাজেয়’ শক্তি হিসেবে প্রমাণ করতে সফল হয়েছে ইরান। ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধবিরতি পর্যন্ত নিয়ে যেতে পেরেছে দেশটি।
যুদ্ধের সমীকরণ অনুযায়ী, পরাজিত শক্তিই মূলত ‘সাদা পতাকা প্রদর্শন’ করে আত্মসমর্পণ করে বা যুদ্ধবিরতি চায়। কাতারে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ইরানের হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের অবস্থাও তেমনই হয়েছে। অনেকটা তড়িঘড়ি করেই যুদ্ধবিরতির দিকে ধাবিত হয়েছেন ট্রাম্প।
তেহরানে অবস্থিত সেন্টার ফর মিডল ইস্ট স্ট্রাটেজিক স্টাডিজের গবেষক আব্বাস আসলানি মনে করেন, ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র ইরানে তাদের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। আল-জাজিরাকে তিনি জানান, যৌথ শক্তির (ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র) উদ্দেশ্য ছিল ইসরাইলের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস করে দেওয়া এবং ‘সরকার পরিবর্তন’ করা। তবে তারা কোনোটাই করতে পারেনি। এখানে রাজনৈতিকভাবে ‘দক্ষ কুশলী’র প্রমাণ দিয়েছে ইরান।
যুদ্ধে ইরানে অন্তত ৬১০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪,৭৪৬ জন। এ তথ্য জানিয়েছে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তারা আরও জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ১৩ জন শিশু, যাদের মধ্যে সবচেয়ে ছোটটি ছিল মাত্র দুই মাসের। নিহতদের তালিকায় ৪৯ জন নারী রয়েছেন, যাদের মধ্যে দু’জন ছিলেন গর্ভবতী। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কেরমানপুর আরও জানান— ৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী নিহত, ২০ জন আহত হয়েছেন। ৭টি হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত, ধ্বংস হয়েছে। এর মধ্যে ৬টি জরুরি সেবা কেন্দ্র, ৪টি ক্লিনিক, ৯টি অ্যাম্বুলেন্স।