শিরোনামঃ
ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে সংস্কৃতি উপদেষ্টার শোক বরেণ্য লোকসংগীত শিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় রাজনীতি অবসানের অঙ্গীকার নবনির্বাচিত জাকসু ভিপির সিনেমা দেখে প্রভাবিত হয়ে বাবাকে হত্যা, ছেলে গ্রেফতার ভিপি নুরের ওপর হামলা: সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাশেদ খান গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা বিএনপির লক্ষ্য: সালাহউদ্দিন আহমদ সাম্প্রদায়িক উত্থানের কারণে মবের ঘটনা বাড়ছে: গয়েশ্বর চন্দ্র অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছে: জি এম কাদের জাকসুর ভিপি জিতু, জিএস মাজহারুল, এজিএস ফেরদৌস ও মেঘলা ডেঙ্গুতে আরও ২ মৃত্যু
রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন

শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশ থেকে ২৫ লাখ কোটি টাকা পাচার

নিজস্ব প্রতিবেদক / ২৫ বার
প্রকাশ: শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ব্রিটিশ প্রভাবশালী দৈনিক ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস (FT) তাদের এক অনুসন্ধানী প্রামাণ্যচিত্রে দাবি করেছে যে, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৫ লাখ কোটি টাকা) অবৈধভাবে পাচার হয়েছে। ১২ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এই ডকুমেন্টারিটির শিরোনাম ‘Bangladesh’s Missing Billions: Stolen in Plain Sight’।

প্রামাণ্যচিত্রে অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী এবং আন্দোলনকারীদের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার করে দেশ থেকে পাচার হয়েছে।

অর্থ পাচারের প্রধান পদ্ধতি

ডকুমেন্টারিতে অর্থ পাচারের প্রধান পদ্ধতি হিসেবে যে বিষয়গুলো উঠে এসেছে, সেগুলো হলো:

  • ওভার-ইনভয়েসিং ও আন্ডার-ইনভয়েসিং: পণ্যের আমদানি-রপ্তানির সময় দাম কৃত্রিমভাবে বাড়িয়ে বা কমিয়ে দেখানো হয়েছে।
  • হুন্ডি: অবৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাঠানো হয়েছে।
  • বিদেশে সম্পত্তি বিনিয়োগ: পাচার করা অর্থ দিয়ে বিদেশে, বিশেষ করে যুক্তরাজ্যে, সম্পত্তি কেনা হয়েছে।

 

যুক্তরাজ্য অর্থ পাচারের অন্যতম কেন্দ্র

ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্য এই অর্থ পাচারের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। লন্ডনের আর্থিক খাত এবং রিয়েল এস্টেট বাজারে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে।

গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নাম

ডকুমেন্টারিতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নামও উঠে এসেছে:

  • শেখ রেহানা এবং তার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক-এর নাম উল্লেখ করা হয়। রিপোর্টে দাবি করা হয় যে, দুর্নীতির সঙ্গে সম্পর্কিত একটি মামলার পর টিউলিপ সিদ্দিককে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয়। যদিও এই অভিযোগ এখনো বিচারাধীন এবং তাদের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
  • বাংলাদেশের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী-এর নামে যুক্তরাজ্যে ৩০০টির বেশি সম্পত্তি রয়েছে বলে দাবি করা হয়। ব্রিটিশ অপরাধ দমন সংস্থা (SCA) ইতোমধ্যে প্রায় ৩৫০টি সম্পত্তি জব্দ করেছে বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।

 

ব্যাংক দখলের অভিযোগ ও বর্তমান পরিস্থিতি

ডকুমেন্টারিতে আরও অভিযোগ করা হয় যে, হাসিনা সরকারের সময়ে সেনা গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় ব্যাংকগুলো দখল করে নেওয়া হয়। অস্ত্রের মুখে অনেক পরিচালককে পদত্যাগে বাধ্য করে ভুয়া ঋণের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে।

বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে যে, অর্থ পাচার রোধে আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় তদন্ত চলছে। অনেক অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষক মনে করছেন, এত বড় অঙ্কের অর্থ ফেরত আনা কঠিন হলেও তা সম্ভব, যদি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকে। অন্যদিকে, সরকারপন্থি ব্যক্তিরা এ ধরনের তথ্যকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন।

 


এ জাতীয় আরো খবর...