কম্পিউটারের খুব কমন একটি ফাংশন কমান্ড কাট-কপি-পেস্ট। আমাদের দৈনন্দিন কম্পিউটার ও স্মার্টফোন ব্যবহারের অবিচ্ছেদ্য অংশ কাট-কপি-পেস্ট কমান্ড। এই যুগান্তকারী উদ্ভাবনের পেছনে অবদান আছে মার্কিন কম্পিউটারবিজ্ঞানী লরেন্স গর্ডন টেসলারের।
ল্যারি টেসলার ১৯৪৫ সালের ২৪ এপ্রিলে নিউইয়র্কে জন্মগ্রহণ করেন। ষাটের দশকে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর তিনি জেরক্স, অ্যাপল, অ্যামাজন এবং ইয়াহুর মতো বিশ্বসেরা প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। কম্পিউটারকে ব্যবহারকারীবান্ধব করে তোলার জন্য কাজ করেন তিনি। তিনি ১৯৭০–এর দশকে নিয়মিত কর্মবাজারে প্রবেশ করেন। কম্পিউটার তখন আজকের মতো সহজলভ্য বা সহজবোধ্য ছিল না। জটিল কমান্ড আর সীমিত গ্রাফিক্যাল ইন্টারফেসের কারণে কম্পিউটার ব্যবহার কঠিন ছিল। ল্যারি টেসলার ১৯৭৩ সালে জেরক্সের পালো অল্টো রিসার্চ সেন্টারে যোগ দেন। এই গবেষণাকেন্দ্রে কম্পিউটারের অনেক কিছু উদ্ভাবন করা হয়। গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস ও পার্সোনাল কম্পিউটিংয়ের অনেক মৌলিক ধারণার জন্ম হয় সেখানে।
ল্যারি টেসলারের এ উদ্ভাবন প্রযুক্তির দুনিয়ায় ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল। ১৯৮০ সালে স্টিভ জবস ল্যারি টেসলারকে অ্যাপলে যোগদানের জন্য রাজি করান। অ্যাপলে ল্যারি টেসলার প্রায় ১৭ বছর কাজ করেন। অ্যাপলে থাকাকালে তিনি লিসা ও প্রথম ম্যাকিন্টোশ কম্পিউটারের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এই কম্পিউটারেই তিনি কাট, কপি ও পেস্ট কমান্ড ব্যবহার করেন। ১৯৮৩ সালে লিসা কম্পিউটারে এই কমান্ড ব্যবহার করা হয়। টাইপিংয়ের কাজে কারসরের ব্যবহারের ধারণাও তাঁর অন্যতম উদ্ভাবন। ল্যারি টেসলার ২০২০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মারা যান।