নেপালে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে উঠে এসেছে তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভ। ‘জেন জি আন্দোলন’ নামে পরিচিত এই প্রতিবাদে সাধারণ মানুষের দারিদ্র্য ও বেকারত্বের বিপরীতে রাজনৈতিক নেতাদের সন্তানদের (যাদের ‘নেপো কিডস’ বলা হচ্ছে) বিলাসবহুল জীবনযাপনের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় জনগণের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি হয়।
এনডি টিভির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, নেপালের সাধারণ মানুষ যখন ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব, মূল্যস্ফীতি ও দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করছে, তখন রাজনৈতিক নেতাদের সন্তানরা নিজেদের দামি গাড়ি, ডিজাইনার পোশাক ও বিলাসবহুল ছুটির ছবি প্রকাশ করে জনরোষের শিকার হন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম যেমন টিকটক, ইনস্টাগ্রাম, রেডডিট এবং এক্স (টুইটার)-এর মাধ্যমে তাদের এই জীবনযাপন সবার সামনে চলে আসে।
কারা এই ‘নেপো কিডস’? বিক্ষোভকারীরা বেশ কিছু রাজনৈতিক নেতার সন্তানকে এই বিলাসী জীবনযাপনের জন্য দায়ী করেন। এদের মধ্যে রয়েছেন:
আন্দোলন চলাকালীন সময়ে বিক্ষুব্ধ জনতা কিছু রাজনৈতিক পরিবারের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এই তীব্র প্রতিবাদের মুখে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি এবং তার মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
বিক্ষোভের কারণ নেপালের এই বিক্ষোভ প্রাথমিকভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শুরু হলেও, এটি দ্রুতই দুর্নীতি, সরকারি অদক্ষতা এবং রাজনৈতিক স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে একটি বড় আন্দোলনে রূপ নেয়। ‘নেপো কিডস’-দের জীবনযাপন এই ক্ষোভকে আরও উসকে দেয়, যা শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক নেতাদের জবাবদিহিতার বিষয়টি সামনে নিয়ে আসে।
বর্তমানে, দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনাবাহিনী কারফিউ জারি করে শৃঙ্খলা রক্ষার চেষ্টা করছে। এই আন্দোলন প্রমাণ করে যে, নেপালের তরুণ প্রজন্ম দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং তারা রাজনৈতিক ব্যবস্থার একটি মৌলিক পরিবর্তনের দাবি জানাচ্ছে।